পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৭৮টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ চলছে। রোববার সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত।
এই ধাপে ৭৮ উপজেলার চেয়ারম্যান ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। এসব উপজেলায় মোট ৮৪২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২০৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ৩৮৬ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ২৪৯ জন।
৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই বড় পরিসরে এই ভোটের আয়োজন ইসির। ভোটের আগেই এই ধাপে ২৮টি পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আছেন ১৫ জন।
প্রথমবারের মতো এই নির্বাচন দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হলেও বিএনপি এ নির্বাচনে প্রার্থী দেয়নি। নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ভাইস চেয়ারমানের পদ দুটিতে প্রার্থিতা উন্মুক্ত রেখেছে। তবে ক্ষমতাসীন জোটের শরিক দলের কোনো কোনো নেতা উপজেলায় সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
নির্বাচন উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মাঠে আছে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড, আর্মড পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। ভোটের ৩২ ঘণ্টা আগে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা নিষিদ্ধ করে ইসি।
প্রথম ধাপে ৮৭ উপজেলার তফসিল ঘোষণা করা হলেও আজ ভোট হচ্ছে ৭৮টিতে। প্রথম ধাপে ইতিমধ্যে আদালতের নির্দেশে তিনটি ও ইসির সিদ্ধান্তে পৃথক তিনটি উপজেলার নির্বাচনের তফসিল স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া জামালপুরের মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ এবং নাটোর সদর উপজেলা পরিষদে সবক\’টি পদে একক প্রার্থী হওয়ায় সেখানে আজ ভোট হচ্ছে না। এখানকার প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রথম ধাপের নয়টি উপজেলায় আজ ভোট হচ্ছে না। বাকি ৭৮ উপজেলার মধ্যে ১৫টিতে চেয়ারমান পদে ও ছয়টিতে ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাতটিতে সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী হওয়ায় এই পদগুলোতেও আজ ভোট হচ্ছে না।
নির্বাচন কমিশন থেকে আগেই জানানো হয়েছে, সারাদেশে পাঁচ ধাপে ৪৮০ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে প্রথম চার ধাপের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আজ অনুষ্ঠিত ৭৮ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা এক কোটি ৪২ লাখ ৪৮ হাজার ৮৫০। মোট ভোটকেন্দ্র পাঁচ হাজার ৮৪৭টি।
যে ৭৮ উপজেলায় আজ ভোট হচ্ছে: রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় সদর উপজেলা, আটোয়ারী, বোদা, দেবীগঞ্জ ও তেঁতুলিয়া; কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী, ফুলবাড়ী, উলিপুর, নাগেশ্বরী, রাজারহাট, রাজিবপুর, কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী ও রৌমারী উপজেলা; নীলফামারী সদর, ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জ উপজেলা এবং লালমনিরহাট সদর, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা ও কালীগঞ্জ উপজেলা।
ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর সদর, সরিষাবাড়ী, ইসলামপুর, বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা এবং নেত্রকোনা সদর, বারহাট্টা, দুর্গাপুর, খালিয়াজুরী, মোহনগঞ্জ, কেন্দুয়া, কলমাকান্দা ও মদন উপজেলা।
সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা, ধর্মপাশা, বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলা এবং হবিগঞ্জ সদর, বাহুবল, মাধবপুর, চুনারুঘাট, লাখাই, নবীগঞ্জ, আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচং উপজেলা।
রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, চৌহালী, কাজীপুর, রায়গঞ্জ, শাহজাদপুর, তাড়াশ ও উল্লাপাড়া উপজেলা; জয়পুরহাট সদর, পাঁচবিবি, আক্কেলপুর, কালাই ও ক্ষেতলাল উপজেলা; নাটোরের বাগাতিপাড়া, গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম, লালপুর ও সিংড়া; রাজশাহী জেলার তানোর, গোদাগাড়ী, মোহনপুর, বাগমারা, পুঠিয়া, দুর্গাপুর, চারঘাট ও বাঘা উপজেলা।
দেশে বর্তমানে ৪৯২টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে। এর মধ্যে ৪৮০টিতে চার ধাপে এবার ভোট হবে। বিভিন্ন সমস্যার কারণে ১২টি উপজেলায় এ বছর ভোট হবে না। দ্বিতীয় ধাপে ভোট হবে ১৮ মার্চ, তৃতীয় ধাপে ২৪ মার্চ ও চতুর্থ ধাপে ৩১ মার্চ ভোট হবে। ঈদের পর জুনে পঞ্চম ধাপের ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।