একদিকে পাইলট অভিনন্দনের মুক্তি উদযাপন চলছিল, আর ঠিক তখনই অন্যদিকে চলছিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পাকিস্তানি সেনাদের গোলা বর্ষণ।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় পুঞ্চ জেলার নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর তারা এ হামলা চালায় বলে দাবি করছে ভারত। এ সময় ৯ মাসের শিশুসহ তিনজন নিহত হয়।
আজ শনিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বলা হচ্ছে, রাতে পুঞ্চের ঝুলাস এলাকায় নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর একটি বাড়িতে পাকিস্তানি সেনাদের গোলার আঘাতে এক নারী তার দুই সন্তানসহ নিহত হয়েছে।
নিহত তিনজনের পরিচয় সম্পর্কে পুঞ্চ পুলিশ জানিয়েছে, ওই নারীর নাম রুবিনা কোসার (২৬), তার পাঁচ বছরের শিশু ফাজান এবং মাত্র ৯ মাসের মেয়ে শবনম। এ সময় গুরুতর আহত হন রুবিনার স্বামী মোহাম্মেদ ইউনিস (৩২)।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সেনারা হাওউইটজার ১০৫ মিমি এবং মর্টার বোমাসহ ভারী বন্দুক নিয়ে সাধারণ মানুষের বসবাসের এলাকাগুলো নিশানায় রেখেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনী এর উপযুক্ত জবাব দেবে।
কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে সালত্রি গ্রামে পাকিস্তানের ফেলা বোমায় বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর আগে পুঞ্চের মানকোট এলাকায় সীমান্তে একজন নারী আহত হন। মানকোট ও সালত্রি ছাড়াও পাকিস্তানি বাহিনী কৃষ্ণাঘাঁটি ও বালাকোট এলাকার গ্রামগুলোকেও নিশানা করেছে। গত আট দিন ধরে জম্মু ও কাশ্মীরে টানা গোলাগুলি চলছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় জেলা কর্তৃপক্ষ আপাতত স্থানীয় মানুষদের ঘর থেকে বেরোতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। পুঞ্চ ও রাজৌরির নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে স্কুলগুলোকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত মঙ্গলবার ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশ করে বিমান থেকে বোমাবর্ষণ করে। পরদিন বুধবার সকালে দুটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত ও এক পাইলটকে আটক করে পাকিস্তান। পাল্টাপাল্টি হামলায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘উত্তেজনা নিরসনে ভূমিকা রাখলে আমরা ভারতীয় পাইলটকে হস্তান্তর করতে প্রস্তুত।’ এর পর পাকিস্তান ঘোষণা দেয় যে শান্তির নিদর্শন হিসেবে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে।