সাবেক ক্রিকেটার, বাংলাদেশে ক্রিকেট কোচিংয়ের অগ্রদূত ও জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব সৈয়দ আলতাফ হোসেন আর নেই।
মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিলো ৮১ বছর।
বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বাদ যোহর মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা হবে নাজিম উদ্দিন রোডের হোসনি দালান মসজিদে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা বিকেল সাড়ে তিনটায়।
১৯৬৫ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তদানীন্তন পাকিস্তান টেস্ট দলে ডাক পেয়েছিলেন সৈয়দ আলতাফ হোসেন। কিংবদন্তি হানিফ মোহাম্মদের নেতৃত্বে সেই টেস্টে মাঠে নামতে পারেননি তিনি। তবে টেস্ট দলে ডাক পাওয়া প্রথম বাঙালি ক্রিকেটার হয়ে যান তিনি। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
সৈয়দ আলতাফ হোসেন ১৯৩৮ সালে পশ্চিমবঙ্গের হুগলিতে জন্মেছিলেন। দেশভাগের পর তাঁর পুরো পরিবার চলে আসে পূর্ববঙ্গে। খেলোয়াড়ি জীবনে আলতাফ হোসেন ছিলেন মিডিয়াম ফাস্ট বোলার। তবে ব্যাটিংটাও ভালোই পারতেন। ১৯৫৪ সালে কায়েদে আজম ক্লাবের হয়ে ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু। এরপর খেলেছেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, ওয়ান্ডারার্স, পিডব্লিউডি, ইস্ট পাকিস্তান জিমখানা ও শান্তিনগর ক্লাবে।
১৯৬১ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান ক্রিকেট দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন তিনি। ক্রিকেট খেলা চালিয়ে গেছেন ১৯৮২ সাল পর্যন্ত। খেলোয়াড়ি জীবনেই ১৯৭০ সালে শুরু করেন আম্পায়ারিং। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের আম্পায়ার হয়ে পরিচালনা করেছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ম্যাচ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভারতের পাতিয়ালায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্পোর্টস থেকে কোচিং কোর্স করে আসা বাংলাদেশের প্রথম কোচ তিনি। পরে কোচিং কোর্স করে এসেছেন ইংল্যান্ড থেকেও।
বাংলাদেশে মহিলা ক্রিকেট চালুর অন্যতম অগ্রদূতও আলতাফ হোসেন। ১৯৯৭ সালে তাঁকেই মহিলা দল গড়ে তোলার দায়িত্ব দেয় বিসিবি। ২০০৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে থেকে চেষ্টা করেছেন মহিলা ক্রিকেটের ভিত শক্ত করার। ১৯৯৯ সালে পেয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার। দেশের ক্রীড়ার সর্বোচ্চ এই স্বীকৃতি পাওয়া প্রথম ক্রিকেট কোচ ছিলেন তিনিই।