পাঁচ বন্ধু তিনটি মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থলের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় ট্রান্সমিটার বিস্ফোরণ ঘটলে আগুনে দুই বন্ধু রোহান, আরাফাত ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আরাফাত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে এ লেভেলের শিক্ষার্থী। কাজী আলাউদ্দিন রোড সংলগ্ন আগা মসজিদ এলাকার বাসিন্দা ছিল আরাফাত।
রোহান নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ\’র সেকেন্ড সেমিস্টারের ছাত্র। নিহত রোহানের বাবা মো. হাসান খান বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গের সামনে আসলেও কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না তিনি।
মর্গের সামনে নিহতের নানা ইউনুস খান জানান, মার্চে রোহানের ছোট বোনের বিয়ে। সেজন্য রোহান বন্ধুদের নিয়ে দৌড়ঝাঁপের মধ্যে ছিল। ওই এলাকায় রোহান বন্ধুদের নিয়ে গেছিল কমিউনিটি সেন্টার, ডেকোরেশনে কথা বলতে এবং কেনাকাটা করতে। তখনই ওই ঘটনা ঘটে।
রোহানের চাচাতো ভাই কাপড় ব্যবসায়ী মমিন খান বলেন, রোহানের মরদেহ মর্গে আছে বলে নিশ্চিত হয়েছি। কিন্তু কেউ রোহানের মরদেহ শনাক্ত করতে পারছি না।
তিনি বলেন, বাইকে পাঁচ বন্ধুর মধ্যে তিন বন্ধু দ্রুত সরে যেতে পারলেও বাঁচতে পারেনি রোহান ও আরাফাত। ওই তিন বন্ধুর মধ্যে মাইনুল ইসলাম লাবিব সামনের বাইকে ছিল। আগুনে লাবিবের মাথার চুল, মুখ পুড়ে গেছে বলে জানান তার মামা ওয়াছেদ।
বাকি দুই বন্ধুর খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।
চকবাজার এলাকায় রাজ্জাক ভবনে গতকাল বুধবার রাতে লাগা আগুনের ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৭০ জনের মরদেহ মর্গে এসেছে বলে জানান ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ।
তিনি বলেন, ডিএনএ টেস্ট করে তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে হবে।
বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের রাজ্জাক ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে স্থানীয়রা জানান। পরে তা পাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ রাত ৩টার দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ২০০ কর্মী। তবে ছোট গলি ও পানির স্বল্পতার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রচণ্ড বেগ পেতে হয়।