রূপালি পর্দায় কত ধরনের প্রেমের ছবি দেখেছেন, পড়েছেন কত না লাভ স্টোরি। কিন্তু এই যুবক যুবতীর প্রেম এগেুলোর একটির সঙ্গেই মিলবে না। বরং সৈয়দ আব্দুল হাদির ‘এমনও তো প্রেম হয়, ও চোখের জলে কথা কয়’গানটির জীবন্ত প্রতিমূর্তি যেন এই প্রেমিক প্রেমিকা।
বলছিলাম হাও আর লাই জি’র কথা। এই প্রেমিক যুগল চীনের বাসিন্দা। পেশায় হাও একজন ট্রেনচালক এবং লাই জি অন্য একটি ট্রেনের অ্যাটেনডেন্ট। দুজনেই খুব ব্যস্ত জীবন কাটান। আর এই ব্যস্ততার মধ্যেই কী করে যেন তাদের প্রেম হয়ে যায়। নিজেদের সবটুকু দিয়ে একে অপরকে ভালবাসেন হাও আর লাই। কিন্তু দু’জনেই কাজে এত ব্যস্ত থাকেন যে, তাদের দেখা হওয়ার সময় সারা দিনে মাত্র দু’মিনিট। তাও রোজ নয়, কয়েক মাস অন্তর। ওই দু’মিনিটই একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে পারেন তারা। তাই বলে তাদের পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা এতটুকু কমেনি, বরং দিনে দিনে বেড়েই চলেছে আবেগ।
সম্প্রতি এই যুগলের এমন আবেগঘন ভালবাসার দৃশ্য ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। একটি সংবাদ সংস্থা প্রকাশ করেছে এই যুগলের দেখা করা ও কথা বলার দু’মিনিটের ভিডিয়ো। ওই ভিডিয়োতে দেখানো হয়েছে সুযোগ পেলেই কী ভাবে দু’মিনিট সময় বের করে নেন হাও এবং লাই।
সেই দু’মিনিট যেন কিছুতেই হাতছাড়া না হয়, তাই এই ভ্যালেন্টাইনের মাসে প্রেমিক হাও প্রেমিকা লাইয়ের জন্য স্টেশনে এসে পড়েন ঘণ্টাখানেক সময় হাতে নিয়ে। অপেক্ষা করতে থাকেন লাউঞ্জে। লাইয়ের ট্রেনটি এলেই যাত্রীদের ওঠা-নামা করবার সময়ে, ওই ট্রেনে উঠে যান হাও। লাইয়ের হাতে পৌঁছে দেন খাবার। একে অন্যকে আলিঙ্গন করেন।
ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে লাই হাওকে বলছেন, ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার সময় হয়ে গেল। কিন্তু হাওয়ের মন কিছুতেই যেন চাইছে না ট্রেন থেকে নেমে যেতে। আরও কিছুটা সময় প্রেমিকার সঙ্গে থেকে যাওয়ার কী চেষ্টা তার! মন যেন চাইছে না লাইয়েরও। কিন্তু দুজনেই যে নিরুপায়।
ওই ভিডিয়োতেই হাও জানিয়েছেন, তিনি অনেকদিন ধরেই ভাবছেন লাইকে তার মনের কথা জানানোর জন্য। কিন্তু প্রেমিকাকে এখনও বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। তার কারণ ওই দু’মিনিট। এত অল্প সময়ে কি বলা যায় সব কথা? দেখা না হতেই যে শেষ হয়ে যায়! তাই প্রতিবার ‘বলব বলব’করেও আসল কথাটাই বলা হয়ে ওঠে না আর।
তবে ওই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে লাইয়ের কাছে একটি আংটি উপহার দিয়েছেন হাও। হাওয়ের ছলছল চোখ অনেক কথাই বলে দিচ্ছে যেন তখন।
হাও এবং লাইয়ের এই প্রেমের রূপকথা চীনের সোশ্যাল মিডিয়া উইবোতে ছড়িয়ে পড়ার পরই তা ভাইরাল হয়। সূত্র: আনন্দবাজার