সিদ্দিকুরকে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপকারী সেই কনস্টেবল চিহ্নিত

কনস্টেবল সাইফুল ইসলামের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শেল সিদ্দিকুর রহমানের চোখে লাগে। পুলিশের দাঙ্গা দমন বিভাগের (পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট-পিওএম) কর্মরত রয়েছে সাইফুল। এ ছাড়া পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে থানা-পুলিশের একাধিক সদস্যেরও অবহেলা ছিল। পুলিশের রমনা বিভাগের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোঁড়ার জন্য কনস্টেবল সাইফুল ইসলামকে অভিযুক্ত করা হয়। আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অবহেলাকারী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে সতর্ক করার সুপারিশ করেছে কমিটি।

পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে গত ২০ জুলাই শাহবাগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশ নিয়ে আহত হন সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ভারতের চেন্নাইয়ে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তবে সেখানকার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অলৌকিক কিছু না ঘটলে সিদ্দিকুরের দৃষ্টি ফেরার সম্ভাবনা নেই। এখন আগারগাঁওয়ের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর।

পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মারুফ হোসেন সরদার গতকাল রাতে বলেন, গতকাল মঙ্গলবার তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের (ডিএমপি) দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। ডিএমপি কমিশনার তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবেন। এর আগে ৭ আগস্ট ডিএমপি সদর দপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটি পুলিশের ৭ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিল।

রমনা বিভাগের তদন্ত কমিটির প্রধান নাবিদ কামাল বলেন, ১৩ দিন সময় নিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। মূলত ঘটনার সময় পুলিশ কর্মকর্তা-সদস্যদের কার কী ভূমিকা ছিল, তা প্রতিবেদনে তুলে ধরে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটি সূত্র জানায়, কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ার জন্য পিওএমের কনস্টেবল সাইফুলকে চিহ্নিত করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য সেখানে কর্তব্যরত কর্মকর্তাদেরও কর্তব্যে অবহেলা ছিল বলে বলা হয়। এ ক্ষেত্রে সবাইকে আরও সতর্ক হতে হবে। কর্তব্যরত জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের তাঁদের অধস্তনদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতে হবে। কোন ধরনের পরিস্থিতিতে পুলিশের মাঠপর্যায়ের সদস্যদের ভূমিকা কী হবে, তা আগেই জানাতে হবে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ-সমাবেশের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলোতে সংযত ও সতর্ক থাকার ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে।

এর আগে ডিএমপি সদর দপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, খুব কাছ থেকে ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শেল সিদ্দিকুর রহমানের চোখে লাগে। এতে দাঙ্গা দমন বিভাগের পাঁচ কনস্টেবলকে অভিযুক্ত করা হয়। ঘটনাস্থলের কাছে শাহবাগ থানার পরিদর্শক মো. আবু জাফর আলী বিশ্বাস ও পরিদর্শক (অভিযান) আবুল কালাম আজাদ থাকলেও তাঁরা পুলিশ সদস্যদের নিবৃত্ত করেননি। এমনকি তাঁরা পুলিশ সদস্যদের সঠিক নির্দেশনাও দেননি। পুলিশ সদস্যরা অপেশাদারসুলভ আচরণ করেন।
ডিএমপি সদর দপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির এক সদস্য বলেন, তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের পর পর্যালোচনা করে কমিটি দেখেছে যে এই কাঁদানে গ্যাসের উপকরণ চোখের জন্য ক্ষতিকারক।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৮ ঘণ্টা, ২৩ আগস্ট ২০১৭,

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস

Scroll to Top