আগামী পঞ্চাশ বছরে সুন্দরবনে আর থাকবে না একটিও রয়েল বেঙ্গল টাইগার। তার কারণ আর কিছুই নয়… স্রেফ বিশ্ব উষ্ণায়ন… জলবায়ু পরিবর্তন। শুধু কি বাঘ?… এ কারণে উজার হতে চলেছে সুন্দরবন নামে বিশ্বের এই প্রধান ম্যানগ্রোভ বনটিও। গবেষকরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নে সুমদ্রের পানির স্তর যে ভাবে বাড়ছে তাতে পঞ্চাশ বছরে সুন্দরবনকে এমন পরিণতিই মেনে নিতে হবে।
অস্ট্রেলিয়ার গবেষকদের উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এসব তথ্য দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ও ভারত অংশ মিলিয়ে সুন্দরবনে এখন হাজার চারেক রয়েল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে, এমনটা উল্লেখ করে গবেষক দলের সদস্য, অস্ট্রেলিয়ার জেমস কুক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিল লরেন্স বলছিলেন, ‘বিশ্বের এই সবচেয়ে বড় আকারের মানুষখেকো বাঘের সংখ্যা এরই মধ্যে অনেক কম, আর তা ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে এগুচ্ছে।
দ্য ইকোনমিকস টাইমস প্রকাশিত খবরে গবেষক দলের অন্য সদস্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) শিক্ষক (সহকারী অধ্যাপক) শরিফ মুকুলকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘সবচেয়ে শঙ্কার দিকটি হচ্ছে বাঘের আবাসস্থল এই সুন্দরবনই ২০৭০ সাল নাগাদ বিলীন হয়ে যেতে পারে।’
গবেষকরা এই বক্তব্যে পৌঁছার আগে সুন্দরবনের নিম্নাঞ্চলের যে অংশগুলো এরই মধ্যে বাঘের ও তাদের শিকারের জন্য বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে তার ওপর কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের গতি-প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করেন।
আগামী দিনগুলোতে আবহাওয়াগত সম্ভাব্য ঝুঁকি ও সমুদ্রের পানির স্তর বেড়ে যাওয়ার বিষয় এই বিশ্লেষণে গুরুত্ব পেয়েছে।
লরেন্স বলছিলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ছাড়াও শিল্পায়নের ধাক্কাও সামলাতে হচ্ছে সুন্দরবনকে। সেখানে নতুন কারখানা হচ্ছে, নতুন নতুন সড়ক তৈরি হচ্ছে, আর পাশাপাশি বাঘ শিকার কিংবা বাঘ হত্যাও বেড়েছে বেশি হারে।’
‘এতে বাঘগুলোর ওপর হুমকি দু’দিক থেকেই বেড়ে চলেছে। প্রকৃতির পাশাপাশি মানুষও তাদের ওপর চড়াও হয়েছে- যার অনিবার্য পরিণতিই হবে এই বিলুপ্তি,’ বলেন এই গবেষক শিক্ষক।
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিএস