আত্মহত্যার সাত-আট দিন থেকে আকাশ মানসিক বিপর্যস্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন তার ছোট ভাই সাগর। তিনি বলেন, ‘আত্মহত্যার আগে সাত-আট দিন ভাই ঠিকমতো খাবার খেতেন না। ঠিকমতো ঘুমাতেও পারতেন না। তাই ঘুমের ওষুধ খেয়ে রাতে ঘুমাতেন।’
বৃহস্পতিবার ভোরে নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার দুই নম্বর সড়কে নিজ বাসায় মোস্তফা মোরশেদ আকাশ আত্মহত্যা করেন। তার গ্রামের বাড়ি চন্দনাইশ উপজেলার বরকল বাংলা বাজার এলাকায়।
অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর ‘বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক’ এর জের ধরে ঝগড়া করে আকাশ আত্মহত্যা করেছেন। এ সম্পর্কে আকাশের ছোট ভাই সাগর বলেন, ‘ভাবির সঙ্গে ভাইয়ার মনোমালিন্য চলছিল গত ২৩ জানুয়ারির আগ পর্যন্ত, আমরা আঁচ করতে পারিনি। ভাইয়া এসব বিষয় আমাদের সঙ্গে কখনও শেয়ার করেননি। গত ২৩ জানুয়ারির পর আমরা জানতে পারি ভাবির সঙ্গে তার মনোমালিন্য চলছে।’
সাগর আরও বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে ভাবি বেশিরভাগ সময় তার বাবার বাসায় থাকতেন। গত ১৩ জানুয়ারি দেশে আসার পরও প্রথম ৪/৫দিন তিনি আমাদের বাসায় ছিলেন। পরে তিনি তাদের বাসায় চলে যান। ভাইয়ার অস্বাভাবিক আচরণের কারণে তাদের দু’জনের মধ্যে ঝগড়ার বিষয়টি আমরা জানার পর ঝগড়া মিটমাট করে দেওয়ার জন্য বুধবার (৩০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আমরা ভাবিকে আমাদের বাসায় আসতে বলি। ওই সন্ধ্যায় তিনি আমাদের বাসায় এসেছিলেন, তবে একটা প্রোগ্রাম আছে বলে বাসার ভেতরে না এসে বাসার নিচ থেকে চলে যান।’
আকাশের পরিবারের লোকজন জানিয়েছে, মিতু কুমিল্লা মেডিক্যালে এমবিবিএস শেষ করে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে ইন্টার্ন করেন। ওইসময় তার সঙ্গে আকাশের পরিচয় হয়। এরপর ২০১৬ সালে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পরপরই উচ্চ শিক্ষার জন্য মিতু যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। সেখান থেকে ১৩ জানুয়ারি তিনি দেশে ফিরে আসেন। তার দুই সপ্তাহের মাথায় বৃহস্পতিবার ভোরে আকাশ নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেন।
আত্মহত্যার আগে আকাশ তার এই মৃত্যুর জন্য স্ত্রীকে অভিযুক্ত করেন। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আকাশ স্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক’ ও ‘প্রতারণার’ অভিযোগ আনেন।
এদিকে এ ঘটনায় পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে নন্দনকানন এলাকা থেকে মিতুকে আটক করেন। শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে এ ঘটনায় আকাশের মা আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে মিতুসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে চান্দগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে ওই মামলা গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে মিতুকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।