বিশ্বের বেশীরভাগ ক্ষমতাধর দেশ আন্তর্জাতিক মহলে নিজেদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে বর্তমানে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তখনই বিষয়টিকে পুরোপুরি অপ্রয়োজনীয় উল্লেখ করে কোনো ধরনের সামরিক শক্তি ছাড়াই নিজেদের পরিচালনা করে আসছে এমন সব দেশের সংখ্যাও নিহাতই কম নয়।
বিশ্বের প্রায় সব দেশই নিজেদের সামরিক শক্তি প্রদর্শন করতে ভালোবাসে, যেমন জাতীয় দিবসের কুচকাওয়াজে। তাছাড়া বিভিন্ন দুর্যোগে তাদের ব্যবহার করা যেতে পারে। অপরদিকে এখনও এমন সব দেশ আছে, যাদের সামরিক বাহিনী বলতে কিছুই নেই।
ট্রুভালু
প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে মাত্র ১০ হাজার জনসংখ্যা নিয়ে গঠিত এই দ্বীপরাজ্যটির আয়তন মাত্র ২৬ বর্গ কিলোমিটার। এখানকার শাসনব্যবস্থা এক ধরনের সংসদীয় রাজতন্ত্র অপরদিকে তারা কমনওয়েলথের সদস্য। এই দেশটিরও কোনো নিজস্ব সামরিক বাহিনী নেই।
অ্যান্ডোরা
ইউরোপের এই ছোট্ট আরেকটি দেশের নাম অ্যান্ডোরা। দেশটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১২৭৮ খ্রিষ্টাব্দে। অ্যান্ডোরার নিজস্ব কোনো সামরিক বাহিনী নেই, তবে প্রয়োজনে স্পেন ও ফ্রান্স দেশটিকে সুরক্ষিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অ্যান্ডোরার মোট আয়তন মাত্র ৪৭৮ বর্গকিলোমিটার, যা কিনা জাকার্তার মতো কোনো বড় শহরের চেয়েও অনেক কম।
ভ্যাটিকান
ভ্যাটিকান হচ্ছে ইতালির রাজধানী রোমের একাংশ। এটি বিশ্বের অন্যতম ক্ষুদ্র দেশ, আয়তনে শূন্য দশমিক চার বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যা মাত্র ৮৪০। কাজেই জনসংখ্যার হিসেবেও ভ্যাটিকান বিশ্বের ক্ষুদ্রতম দেশ। তাদেরও কোনো সামরিক বাহিনী নেই।
কোস্টারিকা
মধ্য আমেরিকার এই দেশটির সংবিধানেই বলা আছে, দেশের নিয়ন্ত্রণে জন্য কোনো সামরিক বাহিনী থাকবে না। ১৯৪৯ সালের পর থেকে এমন পরিস্থিতি চলে আসছে। জাতিসংঘের শান্তি বিশ্ববিদ্যালয় এই কোস্টারিকাতেই অবস্থিত।
সামোয়া
প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে অবস্থিত দ্বীপরাজ্যটি ১৯৬২ সালে নিউজিল্যান্ডের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। মূলত সে সময় থেকেই দেশটির কোনো সামরিক বাহিনী নেই। তবে নিউজিল্যান্ড প্রয়োজনে দেশটির প্রতিরক্ষার জন্য সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে আগে থেকেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
লিখস্টেনস্টাইন
১৮৬৮ সালের পর থেকে ইউরোপের কেন্দ্রে অবস্থিত এই ছোট্ট দেশটি তাদের সামরিক বাহিনী বাতিল করে দিয়েছে। মূলত আর্থিক কারণেই তারা এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তবে তাদের সংবিধানেই বলা আছে দেশে যুদ্ধের সময় সেনাবাহিনী গঠন করা হবে, তবে কোনোদিন তার প্রয়োজন পড়েনি। দেশটি ছোট হলেও সমৃদ্ধ : তাদের মাথাপিছু আয় বিশ্বে শুধুমাত্র কাতারের চেয়েই কম।
গ্রানাডা
আটলান্টিক মহাসাগরের ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে অবস্থিত এই দেশটি আসলে একটিমাত্র দ্বীপ। যার আয়তন মাত্র ৩৪৪ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় এক লক্ষ পাঁচ হাজারের মতো। তারাও কমনওয়েলথের সদস্য। তাদের শাসনব্যবস্থা সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের উপর নির্ভরশীল। এদেরও নেই কোনো সামরিক বাহিনী।
নাউরু
প্রশান্ত মহাসাগরের এই দ্বীপরাজ্যটির আয়তন ২১ বর্গ কিলোমিটারের কিছু বেশি। তাদের মোট জনসংখ্যা মাত্র দশ হাজারের কিছু বেশি। নাউরু মাইক্রোনেশিয়ার একটি অংশ। তাদের নেই কোনো সামরিক বাহিনী।