এসএসসিতে বাতিল হচ্ছে এমসিকিউ!

পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রোধে বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) বাতিলের সিন্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে কমিটি গঠনসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় প্রস্তুতি চলছে।

আগামী বছর থেকে এসএসসিসহ পাবলিক পরীক্ষায় এমসিকিউ বাতিল হতে পারে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আভাস পাওয়া গেছে।

মাধ্যমিক পরীক্ষা সামনে রেখে রোববার সচিবালয়ে জাতীয় মনিটরিং ও আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে (এমসিকিউ বন্ধ) যথাসময়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এটি নতুন কোনো পদ্ধতিতে আয়োজন করা যায় কি-না সেটি আলাপ-আলোচনা করে একটি নতুন রূপ দেয়া হতে পারে। সূত্র জানায়, এমসিকিউ তুলে দেয়ার ব্যাপারে বৈঠকে আলোচনা হয়। বিশেষ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে শিক্ষামন্ত্রীকে অবহিত করা হয় যে, প্রশ্নফাঁসের যে ঘটনা ঘটে সেটা এমসিকিউ প্রশ্ন কেন্দ্রিক। সৃজনশীল প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটে না বললেই চলে।

আলোচনার একপর্যায়ে সারাংশ করা হয় যে, হুট করেই এমসিকিউ প্রশ্ন বন্ধ করা যাবে না। কমপক্ষে দু’বছর সময় নিয়ে ঘোষণা দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে অষ্টম শ্রেণিতে যারা লেখাপড়া করে, তাদের এসএসসি পরীক্ষার সাল ধরে এমসিকিউ বন্ধের বছরটি নির্ধারণ করা যেতে পারে।

এমসিকিউ বাদ দেওয়ার বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন এর আগে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, এমসিকিউসহ পুরো পরীক্ষা পদ্ধতির একটি পরিবর্তন আসতে পারে। এমসিকিউ এখন যেরকম আছে—এ, বি, সি, ডি, সেরকম না করে তার একটা পরিবর্তন আসতে পারে। আক্ষরিক হতে পারে। এটা পুরোপুরি বন্ধ করে সিকিউতে (সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি) যেতে হবে। কিন্তু সিকিউ প্রশ্ন একজন ছাত্রের পক্ষে কতটা লেখা সম্ভব, সেটা বিবেচনায় নিতে হবে।

এ বিষয়ে সভায় উপস্থিত ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক বলেন, এসএসসি পরীক্ষার আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা সভায় এমসিকিউ পরিবর্তনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক পদ্ধতি হলেও আমাদের ব্যবস্থাপনায় ক্রটি থাকায় আমরা বিপদে পড়ে যাচ্ছি। বিগত সময়ে এমসিকিউ প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বৈঠক শেষে এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে (এমসিকিউ বন্ধ) যথা সময়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এটি নতুন কোনো পদ্ধতিতে আয়োজন করা যায় কি-না সেটি আলাপ-আলোচনা করে একটি নতুন রূপ দেয়া হতে পারে।

সূত্র জানায়, এমসিকিউ তুলে দেয়ার ব্যাপারে বৈঠকে আলোচনা হয়। বিশেষ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে শিক্ষামন্ত্রীকে অবহিত করা হয় যে, প্রশ্নফাঁসের যে ঘটনা ঘটে সেটা এমসিকিউ প্রশ্ন কেন্দ্রিক। সৃজনশীল প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটে না বললেই চলে। আলোচনার একপর্যায়ে সারাংশ করা হয় যে, হুট করেই এমসিকিউ প্রশ্ন বন্ধ করা যাবে না। কমপক্ষে দু’বছর সময় নিয়ে ঘোষণা দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে অষ্টম শ্রেণিতে যারা লেখাপড়া করে, তাদের এসএসসি পরীক্ষার সাল ধরে এমসিকিউ বন্ধের বছরটি নির্ধারণ করা যেতে পারে।

সরকারের এই পরিকল্পনাকে শিক্ষাবিদদের অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, এমসিকিউ তখনই কার্যকর হয়, যখন একজন শিক্ষার্থীর পুরো জ্ঞানটা আয়ত্তে আসে। যখন একজন শিক্ষার্থী একটি প্যারাগ্রাফ ভালোভাবে পড়ে আয়ত্ত করে, তখন তার ওপর এমসিকিউ দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু তা হচ্ছে না। তাই প্রয়োজন নেই এই পদ্ধতির। এটি প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রবণতা তৈরি করবে।

Scroll to Top