শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। মৃত শিক্ষার্থী মো. সাইফুর রহমান প্রতীক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন।
সোমবার বিকেলে নগরীর বাগবাড়ি এলাকার একটি মেস থেকে প্রতীকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কোতোয়ালি থানা পুলিশের এসআই আকবর হোসাইন ভূইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, সোমবার বিকেলে প্রতীকের রুমের দরজা ভেঙে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা। আমাদের ধারণা, রোববার মধ্যরাত বা শেষ রাতে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
এদিকে প্রতীকের আত্মহত্যার জন্য বিভাগের শিক্ষকদের দায়ী করে এক ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন তার বড় বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষক শান্তা তাওহিদা।
নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে শিক্ষক শান্তা লিখেছেন, ‘আমার কলিজার টুকরা আদরের একমাত্র ভাই প্রতীক আর নাই। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগকে আমি ছাড়ব না। অনার্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া ছেলেটাকে বিভিন্ন ইস্যু বানিয়ে মাস্টার্সে সুপারভাইজার দেয়া হয়নি। বিভিন্ন কোর্সে নম্বর কম দিয়েছে শিক্ষকরা। আমার ভাইটা শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল। এটাই তার অপরাধ। ছয় মাস ধরে বিভাগে তিলে তিলে মেরে ফেলছে আমার ভাইকে। আমার কলিজার টুকরা কষ্ট সহ্য না পেরে কাল আত্মহত্যা করেছে। আমার কলিজার টুকরা ছাড়া আমি কীভাবে বাঁচব? ভাইরে আমি আসতেছি তোর কাছে ভাই।’
ফেসবুকে আরেক স্ট্যাটাসে শিক্ষক শান্তা লিখেছেন, ‘আমার ভাইটারে গত মাসেও আমি জিজ্ঞেস করেছি, আমি কী তোর বিভাগের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা করব? আমার ভাই বলেছিল, আপু আমি জিআরআই দিয়েছি, আমি ইউকে চলে যাব, আমার তো রেফারেন্স লাগবে। শিক্ষকরা তাকে ভয় দেখিয়েছে, কিছু করলে রেফারেন্স লেটার দেবে না। আমার ভাইরে মেরে ফেলছে ওরা। আমি কই পাব আমার কলিজার টুকরা ভাইকে?’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা প্রতীকের মরদেহের পাশেই আছি। অভিভাবকদের কাছে প্রতীকের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
প্রতীকের বোনের অভিযোগের বিষয়ে প্রক্টর জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি বিষয়টি জানি না। এমন কিছু হলে এ বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হবে।