‘হেন করেন গা তেন করেন গা ধুনা সাপের বিষ মারেন গা’

রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিএনপির বিভিন্ন সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আগেও রোহিঙ্গা এসেছে আপনারা তো কিছুই করেন নাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের অধিবেশনে গিয়েও বলছে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য। শেখ হাসিনা চায় কূটনীতিক ভাবে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করতে। আর আপনারা (বিএনপি) বলেন হেন করেন গা তেন করেন গা ধুনা সাপের বিষ মারেন গা।’

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) অপরাজেয় বাংলার আয়োজনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে দেশ ও বিদেশি কুচক্রি মহলের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র এবং অবৈধ পন্থায় সরকার পতনের অপচেষ্টায় লিপ্ত সকল গণশক্রদের অপকর্মের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিভিন্ন সংকটের মধ্যে দিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে কিছু দিন আগে পাহাড়ি ঢলে অনেক মানুষ নিহত হয়েছে। এরপর দেশে আসল বন্যা। এরপর পরই চলে আসলো রোহিঙ্গা সংকট। আমরা এ সংকট যুদ্ধের মাধ্যমে নয় বরং কূটনীতিক ভাবে সমাধান করতে চায়।’

প্রকৃতিক দুর্যোগের কারণে চাল আমদানি করতে হচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, ‘আমরা যেখানে বিদেশে চাল রফতানি করতাম সেখানে আমাদের বিদেশ থেকে চাল আমদানি করতে হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু মিডিয়াতে হঠাৎ করে নিউজ আসল ভারত আমাদের চাল দিবে না। পরে সেটা যে মিথ্যা তা প্রমাণ হয়েছে। আমাদের এবার আউশের ফলন আগের বছরের চেয়ে ৫ লক্ষ টন বেশি উৎপাদন হয়েছে।’

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘৯২ দিন চাঙ্গে উইঠা বসে ছিলেন। ভেবেছিলেন শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটিয়ে সিংহাসনে বসে যাবেন। কিন্তু কি হল? এখন আপনি বিদেশে গিয়ে বসে আছেন। বলেছিলেন ১৫ তারিখে দেশে আসবেন। এখন শুনছি দেশে আসবেন না। আবার বলেন ডাক্তারের সিরিয়াল পেয়েছেন ডাক্তার দেখিয়ে দেশে আসবেন। এসব ভাওতাবাজি বাংলাদেশের মানুষ বুঝে। আপনি বিদেশে বসে ভেবেছিলেন, অমুকটা ঘটে যাবে, কিন্তু ঘটে নাই।’

খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা (বিএনপি) নির্বাচনে আসেন নাই। আপনারা আগেই বুঝতে পেরেছিলেন শেখ হাসিনার কোন জনপ্রিয়তার কমে যায় নাই। তখন আপনারা বেছে নিলেন ৯২ দিনের দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত। এই ৯২ দিনে পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছেন। এই সময় যখন আপনার (খালেদা জিয়া) ছেলে কোকো মারা যায় তখন আপনার আরেক ছেলে তারেক তো কোকোর জানাজায় আসে নাই। আপনি (খালেদা জিয়া) তিন দিনের দিন যে কুলখানির দিনে কবরে গিয়ে দোয়া করতে হয় তাও করেন নাই। আপনি বসে ছিলেন শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়ে সিংহাসনে বসতে।’

বাংলাদেশের পরাজয় নেই উল্লেখ করে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ চিরদিনই অপরাজেয়। আমাদের হারার কোন ইতিহাস নেই। শুধু মাত্র কিছুদিনের জন্য থমকে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু পরাজিত করতে পারেনি। সকল ষড়যন্ত্র পার করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে।’

২১ অাগস্ট গ্রেনেড হামলার কথা মনে করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর প্রভাবশালী এই সদস্য বলেন, ‘২১ আগস্ট যদি তারা সফল হত তাহলে একবার চিন্তা করতে পারেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কি অবস্থা হত? তারা চেয়েছিল আওয়ামী লীগকে শেষ করে দিতে। তাই আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীদের সচেতন থাকে হবে সকল দেশবিরোধী চক্রান্তের বিরুদ্ধে।’

এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করার চেষ্টা করছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কূটনীতিক ভাবে সমাধান করার চেষ্টা করছে। আমরা আশা করি যুদ্ধ নয় কূটনীতিক সমাধানের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে পারব।’

রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিএনপির ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সবাইকে খাবারের ব্যবস্থা করেছি, বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছি। আমাদের ১৬ কোটি মানুষ নিয়েই সমস্যাই আছি। তারপরও ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। বিএনপি-জামায়াত ছাড়া সকল রাজনৈতিক দল সকল সংগঠনগুলো যখন রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ঐক্যবদ্ধ তখন বিএনপি এই ইস্যুতে আলোচনা করার দাবি করে। কোন প্রকার আলোচনার প্রশ্নই উঠে না সংলাপের প্রশ্নই উঠে না।’

সংগঠনের সভাপতি এইচ রহমান মিলুর সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মুরাদ, যুগ্ম-সম্পাদক কামাল চৌধুরী, চারুকলা একাডেমির পরিচালক মনিরুজ্জামান, অাওয়ামী লীগ নেতা রাশেক রহমান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময় : ১৬৫৯ ঘণ্টা, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/ডিএ

Scroll to Top