দেশের প্রায় ৩১ লাখ ভোটারের তথ্য নির্বাচন কমিশনের সার্ভার থেকে চুরি বা উধাও হয়েছে। যা দেশের মোট ভোটারের ৩ শতাংশ । নির্বাচন কমিশন সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসি সূত্র জানা যায়, ভোটারদের তথ্য ইসির সার্ভারে খুঁজে না পাওয়ায় স্মার্ট কার্ড উত্তলসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ৩১ লাখ নাগরিক। বছরের শুরু দিকে ১ শতাংশ ভোটারের তথ্য পাওয়া যাচ্ছিলনা। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে দ্রুত ভোটারদের তথ্য সার্ভার থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
দেশে বর্তমানে মোট ভোটার ১০ কোটি ১৮ লাখ। এ ভোটারদের মধ্যে ৩ শতাংশ ভোটারের তথ্য ইসির সার্ভার থেকে হারিয়ে গেছে। তাদের তথ্য যাচাই করতে গেলে (নট ফন্ট) দেখায় কোন তথ্য আসে না। এসব ভোটারদের আবার নতুন করে ভোটার হতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে থাকলেও ইসির সার্ভারে তথ্য না থাকায় এসব ভোটার স্মার্ট কার্ড পাবে না। একই সাথে ব্যাংক হিসাব খোলাসহ বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হবে এসব নাগরিক।
জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম বলেন. আমাদের এ সমস্যাটা খতিয়ে দেখছি। দ্রুত সমাধান হবে। যে সব ভোটারের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না তাদেরকে পরবর্তীতে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে।
এদিকে চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও প্রায় তিন কোটি স্মার্ট কার্ড দেয়নি ফ্রান্সের কোম্পানি অবার্থুর টেকনোলজিস। অথচ কাজের তুলনায় কোম্পানিটিকে বেশি অর্থ প্রদান করা হয়েছে। বিদেশি এই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতায় ১ মাস স্মার্টকার্ড উৎপাদন বন্ধ থাকার পর । নিজস্ব প্রযুক্তিতে স্মার্ট কার্ড উৎপাদন করছে ইসি। একই সাথে বিদেশি ঐ কোম্পানিটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, স্মার্ট কার্ডের জটিলতা নিরসনে ইসির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করা হয়। এ সময় বিদেশী কোম্পানির ব্যর্থতার জন্য ৩শ কোটি কাটা ক্ষতির বিষয়টি জানানো হয়। এ সময় সরকারি তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তার আশ্বাস পাওয়া গেছে। ফলে ইসির অধিন ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং এক্সেস টু সার্ভিস (আইডিইএ)’ প্রকল্পে কর্মরত দক্ষ জনবলের মাধ্যমে দেশেই স্মার্ট কার্ড উৎপাদন করছে।
২০১৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নয় কোটি ভোটারকে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত স্মার্টকার্ড দিতে ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ফরাসি কোম্পানি ‘অবার্থুর টেকনোলজি’র সঙ্গে চুক্তি করে ইসি। ৮শ কোটি টাকার ওই চুক্তির আওতায় ১৮ মাসের মধ্যে নয় কোটি কার্ড ফ্রান্স থেকে তৈরি করে এনে ইসি সচিবালয়ের পারসো সেন্টারে পার্সোনালাইজেশনের পর উপজেলা পর্যায়ে বিতরণ করার কথা ছিল।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব কার্ড সরবরাহ করতে না পারায় গতবছর অবার্থুরের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয় তাদের। এরপরও সব কার্ড সরবরাহ করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের ৯ কোটি নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড পৌঁছে দেওয়ার কথা।
বাংলাদেশ সময় : ১৪৪৩ ঘণ্টা, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এ