ঢাকা-৮: বিএনপিতে শীর্ষে সোহেল, আছেন আব্বাসও

রাজধানীর কেন্দ্র মতিঝিল, রমনা ও পল্টন এলাকা নিয়ে ঢাকা-৮ আসন সব দলের কাছেই অতি গুরুত্বপূর্ণ। টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি এই গুরুত্বপূর্ণ আসনে শক্তিশালী প্রার্থী দিয়ে সেটি পুনরুদ্ধার করতে চায়।

এখানে বিএনপির প্রার্থিতা নিয়ে দলের বিভিন্ন স্তরে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশির ভাগ নেতাকর্মী বলছেন, নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রহণযোগ্য ও দলে প্রভাব আছে এমন কাউকেই এখানে প্রার্থী করবে দলটি। সেক্ষেত্রে আলোচনার শীর্ষে আছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল।

তবে সোহেলের সমর্থকরা বলছেন, দল শেষ পর‌্যন্ত নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে ঢাকা-৮ আসনে হাবিব উন নবী খান সোহেলই মনোনয়ন পাবেন। নেতাকর্মীদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে শক্ত অবস্থানে থাকা এই তরুণ রাজনীতিক নবম সংসদ নির্বাচনে এই এলাকা থেকেই নির্বাচন করেছেন।

রংপুরে জন্ম হলেও এখন ঢাকার বাসিন্দা সোহেল। সবশেষ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কমিটিতে তাকে সভাপতি করায় নেতাকর্মীদের মনে পোক্ত ধারণা জন্মেছে তিনি ঢাকা থেকে নির্বাচন করবেন। আর যেহেতু নবম সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে নির্বাচন করেছিলেন সে কারণে আগামীতেও এখান থেকেই লড়বেন।

শাহবাগ থানা স্বেচ্ছাসেদক দলের নেতা মাসুদ বলেন, ‘ঢাকা-৮ নির্বাচনী এলাকায় সোহেল ভাইয়ের নির্বাচনের পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। একই সঙ্গে তরুণ নেতা হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় এবং এই এলাকার থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের একটি অংশের নেতাকর্মীর কাছে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তার।’

ঢাকা থেকে নির্বাচন করবেন- এমন ইঙ্গিত হাবিব উন নবী খান সোহেল নিজেও দিয়েছেন। যদিও এখনই নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে রাজি নন তিনি।

সোহেল বলেন, ‘ঢাকা থেকে নির্বাচন করব এটা ঠিক। কিন্তু কোথায় করব সেটা দল সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এখন আমরা নির্বাচন নিয়ে ভাবছি না। কীভাবে অগণতান্ত্রিক এই সরকারকে হটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করব, সেটাই আমাদের মূল চিন্তা।’

এর সঙ্গে আরো চিন্তা আছে সোহেলের। বিএনপির অন্যান্য শীর্ষ নেতার মতো তার বিরুদ্ধে রয়েছে শতাধিক মামলা। এসব মামলায় একাধিকবার কারাগারেও যেতে হয়েছে সাবেক এই ছাত্রনেতাকে।

নতুন করে বিন্যাস হওয়ার পর ঢাকা-৮ আসনে গত দুবার নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন ১৪ দলের প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। বর্তমানে তিনি বিমান চলাচল ও পর‌্যটনমন্ত্রী। জোটগত নির্বাচন হলে আগামী নির্বাচনেও এই আসন থেকে তিনি ১৪ দলের প্রার্থী হতে পারেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৯, ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড এ আসনের আওতাভুক্ত।

এদিকে এই আসনে বিএনপির নেতাদের মধ্যে আরো আলোচনায় রয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস। শোনা যাচ্ছে তিনিও এই আসন থেকে নির্বাচন করতে চান।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্বিন্যাসের আগে মতিঝিল, শাহজাহানপুর, সবুজবাগ, মুগদা, খিলগাঁও নিয়ে ঢাকা-৬ আসনের এমপি ছিলেন। এই এলাকার তার নিজস্ব ভোট রয়েছে।

সোহেলের মতো মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ১৭টিসহ অর্ধশতাধিক মামলা রয়েছে।

তবে মামলাসংক্রান্ত কারণে এই দুজন নির্বাচন করতে না পারলে দলের ভাইস চেয়ারম্যান (পদত্যাগী) মোসাদ্দেক আলী ফালুকে এ আসনে প্রার্থী করা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।

যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠজনের সূত্রে জানা গেছে, অনেক দিন ধরে রাজনীতির বাইরে থাকা ফালু আগামী দিনে কোনো নির্বাচন করতে আগ্রহী নন। চিকিৎসার জন্য বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। – বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস

বাংলাদেশ সময়: ১০২১ ঘণ্টা, ২২ আগস্ট ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসএফ

Scroll to Top