৩৫০ টাকার টিকিট ৭৫০ টাকা!

ঈদকে সামনে রেখে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন নগরবাসী। বাস কাউন্টারগুলোতে তেমনটা ভিড় নেই। বাসও ছাড়ছে নির্ধারিত সময়ের সর্বোচ্চ আধা ঘণ্টা বিলম্বে। তবে সব স্বস্তিকে ম্লান করে দিচ্ছে বাড়তি ভাড়া। ঢাকা থেকে লক্ষীপুরের বাস ভাড়া ৩৫০ টাকা। কিন্তু ঈদযাত্রায় নেওয়া হচ্ছে ৭৫০ টাকা! সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বাস টার্মিনালে \’ভিজিল্যান্স টিম\’ পরিচালনা করলেও বাস মালিকরা যথেচ্ছা ভাড়া আদায় করছেন।

মঙ্গলবার রাজধানীর জিগাতলার কাউন্টার থেকে ঢাকা-লক্ষীপুর রুটের \’ইকোনো পরিবহন\’র দু\’টি টিকিট দেড় হাজার টাকায় কেনেন সাংবাদিক জাহিদুর রহমান। দ্বিগুনেরও বেশি ভাড়া আদায় করছে পরিবহনটি। ঢাকা-নেয়াখালী রুটের \’একুশে\’ \’রয়েল\’, \’হিমাচল\’সহ বেশ কয়েকটি পরিবহনে দ্বিগুনেরও বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

ইকনো পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার নুরুর রহমান নুরন জানান, সাধারণ সময়ে তাদের বাসের টিকিটের দাম ৩৫০ টাকা। ঈদে বেড়েছে। তিনি দাবি করেন, ভাড়ার বিষয়ে তাদের কিছুই করার নেই। মালিক যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন সে দামেই টিকিট বিক্রি করছেন। এ বিষয়ে জানতে পরিবহনটির মালিকদের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

শুধু ঢাকা-নোয়াখালী রুটে নয়, সব পথেই ঈদযাত্রায় অধিকাংশ পরিবহন মালিক বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন। বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ করার আহ্বান জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিআরটিএ\’র ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে, আপনারা সেখানে অভিযোগ করবেন। বাড়তি ভাড়া আদায় করলেও সংশ্লিষ্ট পরিবহনের কাউন্টার বন্ধ করে দেওয়া হবে।

বাড়তি ভাড়ার অভিযোগের বিষয়ে বিআরটিএ\’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জোহরা খাতুন বলেন, হিমাচল পরিবহনকে ইতোমধ্যে সতর্ক করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে অন্যান্য পরিহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরেজমিনে গাবতলী টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, নামীদামী পরিবহনগুলোতে বাড়তি ভাড়ার অত্যাচার নেই। যেসব বাসে আগাম টিকিট দেওয়া হয় না, সেগুলো যান সঙ্কট কাজে লাগিয়ে ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। বহু বছর ধরেই এ অনিয়ম চলছে। রজনীগন্ধ নামের একটি বাসে নাটোরের ভাড়া দাবি করা হয় ৮০০ টাকা। অথচ এ রুটের ভালো মানের বাসে ভাড়া ৪৬০ টাকা। ঈদের সময় কেন এভাবে ভাড়া বাড়ানো হয়- এ প্রশ্নে বাসটির কর্মীরা জানান, মালিকের ইচ্ছায় ভাড়া নির্ধারিত হয় এসব বাসে। যাত্রী সঙ্কটের কারণে সারা বছর কম ভাড়া নেওয়া হয়। ঈদে তিন চার গুণ ভাড়া নিয়ে লাভ তুলে নেওয়া হয়।

ভাড়ার অনাচার থাকলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত মোটামুটি নির্ধারিত সময়েই ঢাকার টার্মিনালগুলো থেকে বাস ছেড়েছে। গত ঈদুল আজহায় মহাসড়কে যানজটের কারণে ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে বাস ছাড়ে। হাজার হাজার যাত্রীকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাউন্টারগুলোতে বাসের অপেক্ষায় বসে থাকতে হয়। এবার পরিস্থিতি অনেক ভাল বলে জানালেন গাবতলীর \’হানিফ এন্টারপ্রাইজ\’ উত্তরবঙ্গ কাউন্টারের মাস্টার মো. পারভেজ।
সূত্র- দৈনিক সমকাল

বাংলাদেশ সময়: ১২৪১ ঘণ্টা, ৩০ আগস্ট ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসডিএম

Scroll to Top