জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষকদের উৎপাদনে নিতে হচ্ছে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ। নতুন রোগ-বালাইয়ে জন্য একদিকে যেমন খরচ বাড়ছে, অন্যদিকে এর প্রভাব পড়ছে উৎপাদনেও। এমন পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগকে কতটা পাশে পাচ্ছেন কৃষক? একাধিক কৃষকের অভিযোগ, ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পরামর্শ তো দূরের কথা, অনেকেই তাদের চিনেনও না। তবে কৃষি বিভাগের দাবি, সার্বক্ষণিক কৃষকের পাশে রয়েছেন তারা।
রংপুর বিভাগের সব থেকে বেশি আবাদি জমির পরিমাণ মিঠাপুকুর উপজেলায়। এখানে বছরে আলুসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদনের পরিমাণ গড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে কৃষকদের।
লতিফপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে একই জাতের বেগুন গাছে দুই রংয়ের বেগুন ফলছে। বেড়েছে নিত্য নতুন রোগবালাই। তবে কৃষি বিভাগের পরামর্শ না পাওয়ার অভিযোগ তার।
কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নিজেই নানান কীটনাশক দিয়ে ফসল বাঁচানোর চেষ্টা করছি। দোকানে গিয়ে পরামর্শ করে মেডিসিন দিচ্ছি। সার দিচ্ছি, আবার কেউ বললে ঔষধ দিচ্ছি। কৃষি বিভাগ থেকে কোনো পরামর্শ পাচ্ছি না।’
সত্যতা যাচাইয়ে ওই ওয়ার্ডের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে বিকেল ৪টার দিকে একজন কৃষককে দিয়ে ফোন দেয়া হয়। তবে শরিফুল ইসলাম নামে ওই কর্মকর্তা আসতে পারবেন না বলে জানিয়ে পরদিন যোগাযোগ করতে বলেন। ওয়ার্ডটির একাধিক কৃষক অভিযোগ করেন, কোনো সময়ই কৃষি বিভাগের কাছ থেকে সহযোগিতা মেলে না।
বিকেল সাড়ে চারটায় উপজেলা কৃষি অফিসে গিয়ে ওই উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকেও পাওয়া যায়নি। কৃষকের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে, কৃষি কর্মকর্তা জানান, রোগীরা ডাক্তারের কাছে না আসলে সেবা মিলবে কীভাবে? তবে বিভাগের সর্বোচ্চ কর্তার দাবি, তারা সব সময়ই কৃষকের পাশে রয়েছেন।
মিঠাপুকুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাইফুল আবেদীন বলেন, ‘জ্বর হয় কৃষকের, জ্বর হলে কৃষক ডাক্তারের কাছে যায় নাকি ডাক্তার কৃষকের কাছে যায়! এটা হলো ভাইস ভার্সা। একে অপরের কাছে আসতে হবে।’
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুল রহমান মণ্ডল বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে উঠান বৈঠক করা হচ্ছে। ফলে কৃষকরা এ বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়েছেন।’
প্রতিটি ইউনিয়নে ৩টি ওয়ার্ড মিলে কৃষকদের সার্বিক বিষয়ে পরামর্শ দিতে দায়িত্বে রয়েছেন একজন করে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা। তবে অভিযোগ রয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদের কাছে পান না কৃষক।