শীতে সরগরম খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলো

যান্ত্রিক জীবনে নানান কর্মব্যস্ততায় জীবনের ছক থেকে বেরিয়ে পর্যটকের পদভারে মুখর রূপের পাহাড় ঝরনা-ঝিরিখ্যাত পর্যটনের সম্ভাবনাময় জনপদ খাগড়াছড়ি। পর্যটকের পদভারে শীতে সরগরম হয়ে উঠেছে খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলো।

শীতের শুরুতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ পার্ক (ঝুলন্ত সেতু), রহস্যময় সুরঙ্গ আলুটিলা ও রিছাং ঝরনাসহ জেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র লোকে লোকারণ্য। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

পর্যটকদের ব্যাপক উপস্থিতিতে খুশি পর্যটন ব্যবসা সংশ্লিষ্টরা। এরইমধ্যে খাগড়াছড়ির অধিকাংশ হোটেল, কটেজ বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটক সমাগম স্বাভাবিক থাকলে শীত মৌসুমে ভালো আয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা।

পাহাড়, ঝরনা-ঝিরিখ্যাত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এ জেলায় পর্যটন মৌসুমে মাসে ভ্রমণ করে ৪০ হাজারের মতো পর্যটক। পর্যটকদের সমাগম আরও বাড়লে অতীতের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের লম্বা ছুটি ও ভ্রমণ উপযোগী শীতের শুরুতে আলুটিলা রহস্যময় সুড়ঙ্গ, ঝুলন্ত ব্রিজ, তারেং, রিছাং ঝরনাসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ছুটছেন ভ্রমনপিপাসু পর্যটকরা। খাগড়াছড়ি হয়ে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটছেন মেঘের রাজ্য সাজেকের রুইলুইপাড়া ও কংলাক পর্যটন কেন্দ্রে। প্রতিদিনই শত শত পর্যটক যাচ্ছেন সাজেক ভ্রমণে।

নোয়াখালী থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটক ফোরকান সোহাগ বলেন, ‘অনেকদিন কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টানা ছুটি ও শীতে ভ্রমণের সুযোগ মিস করতে চাইনি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। পাহাড়ের সৌন্দর্যে আমরা বিমোহিত।’

পাহাড়ে ঘুরতে আসা ঢাকার শিক্ষার্থী কামরুল হাসান বলেন, ‘পাহাড়ের সৌন্দর্য বরাবরই মুগ্ধ করে। শীতের সময় পাহাড়ে বেড়ানোর ভালো সময়। বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে খাগড়াছড়ির আলুটিলা রহস্যময় সুরঙ্গ, রিছাং ঝরনা, ঝুলন্ত ব্রিজে ঘুরেছি। এখানকার সৌন্দর্যে আমরা মুগ্ধ।’

আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক চন্দ্র কিরণ ত্রিপুরা বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ও শীতের শুরুতে এখানে প্রচুর পর্যটক আসছে। এখানে ঝুলন্ত ব্রিজ, নন্দন পার্ক, ভিউ পয়েন্টসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। নিরাপত্তার কোনো সংকট নেই।’

খাগড়াছড়ির আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘পর্যটক এলে এখানে বিভিন্ন সেক্টরের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। আমরা পর্যটকদের বরণে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।’

ব্যবসায়ী মো. আবু বকর মনা বলেন, ‘পর্যটকদের আগমনে আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।’

আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে সৃষ্ট সংঘাতসহ নানান কারণে মাঝে মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় সম্ভাবনাময় খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটগুলো। পর্যটনকেন্দ্রিক সব বিধিনিষেধ প্রত্যাহার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির পর্যটন খাত হয়ে উঠতে পারে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির বড় দুয়ার।

Scroll to Top