বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জোর দাবি ভারতের বিশিষ্টজনদের

ঢাকা-নয়াদিল্লির শীতল সম্পর্ক দ্রুত উজ্জীবিত করার তাগিদ দিচ্ছেন ভারতের বিশিষ্টজনরা। তাদের অভিযোগ, কিছু অতি উৎসাহী রাজনৈতিক শক্তি সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে দুই দেশের সাধারণ মানুষের মাঝে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। রাজনৈতিক দৃষ্টিতে নয়; বরং দুদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে জোর দেয়ার দাবিও জানাচ্ছেন ভারতীয়রা।

ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানের জেরে ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালাতে হয় শেখ হাসিনাকে। রয়েছেন দিল্লির আশ্রয়ে। এরপর থেকে বাংলাদেশিদের জন্য সব ধরনের ভিসিট ভিসা বন্ধ রেখেছে ভারত।

এতে প্রায় ঝিমিয়ে পড়েছে ভারতের বাংলাদেশি পর্যটক নির্ভর ব্যবসা বাণিজ্য। আগের তুলনায় কমছে আমদানি-রফতানিও। ভারতের বিশিষ্টজনরা মনে করেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে দীর্ঘমেয়াদে দুই দেশের সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

ভারতের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় দু’দেশেরই লাভ দেখছেন ভারতীয়রাও। তাই ভারতের বিশিষ্টজনরা দ্রুত সম্পর্ক উন্নয়নের তাগিদ দিচ্ছেন। তাদের দাবি, সম্পর্ক খারাপ হলে ভুগবে দুই রাষ্ট্র।

সমাজসেবক ও রাজনীতবিদ ফুয়াদ হালিম বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়ের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এখানে কেউ হোটেল চালাচ্ছে, রেস্টুরেন্ট চালাচ্ছে, কাপড়ের ব্যবসা করছে, ভারত থেকে আলো রফতানি করছে, পেঁয়াজ রফতানি করছে। অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ব্যবহারযোগ্য প্রচুর জিনিস আসছে। পাশাপাশি বাংলাদেশে অনেক বড় বড় প্রকল্পে ভারতের অনেকে কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, বড় ব্যবসায়ীরা হয়তো এক দেড় বছরের মধ্যে ধাক্কা সামাল দিতে পারে, কিন্তু ছোট ব্যবসায়ী বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী যারা আছে তারা তিনচার মাস বিপদে পড়লে টিকে থাকা অীনেক কষ্ট হয়ে যায়। তাদের কথায় মাথায় রেখে দ্রুততার সঙ্গে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা উচিত।

শুধু তাই নয়,বাংলাদেশি রোগী বয়কট করার বিষয়েও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভারতের বিশিষ্ট চিকিৎসকরা। তাদের অভিযোগ, এ ধরণের দাবি চিকিৎসা শাস্ত্র এবং মানবিকতার পরিপন্থি।

ভারতের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, বাংলাদেশে কী হচ্ছে আর আমি যদি ঘোষণা করে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দিলাম, এটা মানবিকতার পরিপন্থি কাজ। ভারতবর্ষের চিকিৎসকরা পরিস্কার বলে দিয়েছে চিকিৎসা করবে। উত্তেজনা থামানো প্রয়োজন। আমরা নিজেদের পরস্পরের মধ্যে মৈত্রির সম্পর্ক রাখতে চাই।

ভারত-বাংলাদেশে দুই দেশে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার পর্যটক যাতায়াত করতেন। সেই সংখ্যা এখন নেমে এসেছে শতকের ঘরে। ভারতের পর্যটন খাত থেকে আসা রাজস্বের দ্বিতীয় সবোর্চ্চ যোগানদাতা বাংলাদেশি পর্যটক। আর সেখানেই ধাক্কা পড়েছে ভারতের।

Scroll to Top