রাজধানীতে হঠাৎ শীতের প্রকোপ বেড়েছে। ঘনকুয়াশার সঙ্গে রয়েছে হিমেল বাতাসও। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় হাঁড় কাঁপানো শীত পড়ছে। এ অবস্থায় ঠান্ডা পানি দিয়ে অজু-গোসল করা কষ্টকর।
অজু পবিত্রতার অন্যতম মাধ্যম। এটি আরবি শব্দ। এর অর্থ পরিচ্ছন্ন, সুন্দর ও স্বচ্ছ। পারিভাষিক অর্থে বিশেষ নিয়মে বিভিন্ন অঙ্গ ধোয়াকে অজু বলা হয়। অজুর বিকল্প পদ্ধতি হচ্ছে তায়াম্মুম। আর এটি করার জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট নীতিমালা।
অনেকে জানতে চেয়েছেন, তীব্র শীতে তায়াম্মুম করা যাবে কি?
এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, পানি না থাকলে অথবা পানি ব্যবহারে অক্ষম হলে অজু ও গোসলের বিকল্প হিসেবে তায়াম্মুম করার অনুমতি দিয়েছে ইসলাম। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন,
তোমরা যদি পীড়িত হও বা সফরে থাকো বা তোমাদের কেউ শৌচালয় থেকে আসে বা তোমরা স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হও এবং পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে, অর্থাৎ তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ করবে। আল্লাহ তোমাদের কষ্ট দিতে চান না; তিনি শুধু তোমাদের পবিত্র করতে এবং তোমাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো। (সুরা মায়িদা: ৬)
১. যদি ঠান্ডা পানি ব্যবহার করলে মারা যাওয়ার, শরীরের কোনো অঙ্গ অকার্যকর হয়ে যাওয়ার, অসুস্থ ব্যক্তির অসুখ ভালো হতে দেরি হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস বা প্রবল আশঙ্কা হয়; পানি গরম করার বা ঠান্ডা পানি ব্যবহার করার পর দ্রুত শরীর গরম করার কোনো ব্যবস্থাও না থাকে, তাহলেই তায়াম্মুম করা বৈধ। অন্যথায় অজু-গোসল করা আবশ্যক।
২. ক্ষতি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা না হয়ে শুধু ভয় বা আশঙ্কা থাকলে তায়াম্মুম করা যাবে না।
৩. গরম পানির ব্যবস্থা থাকলে অথবা বদ্ধ ঘরে অজু-গোসল করার সুযোগ হলে অথবা অজু-গোসলের পর দ্রুত শরীর গরম করার ব্যবস্থা থাকলে তায়াম্মুম বৈধ নয়। (আল বাহরুর রায়েক: ১/১৪৮)
দেশে যে মাত্রার শীত পড়ে, তার প্রভাবে পানি এতো বেশি ঠান্ডা হয় না। ফলে তা দিয়ে অজু-গোসল করলে সাধারণত মৃত্যু বা অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে না। আর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে অজুতে রয়েছে দ্বিগুণ সওয়াব। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
প্রচণ্ড ঠান্ডার মৌসুমে যে পরিপূর্ণ অজু করবে, তাকে দ্বিগুণ সওয়াব দেয়া হবে। (মাজমাউজ জাওয়ায়িদ)
তায়াম্মুমের ফরজ তিনটি
১. নিয়ত করা
২. সমস্ত মুখমণ্ডল মাসেহ করা।
৩. উভয় হাতের কনুইসহ মাসেহ করা।
(সূত্র: সুরা মায়েদা ৬; ফতোয়ায়ে শামি ১/৯৬; খুলাসাতুল ফতোয়া ১/৩৫)