প্রায় চার মাস পর চোখ মেলে হাত-পা নেড়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ শিশু মুসা। সেইসঙ্গে উঠে বসতেও পারছে সে। বর্তমানে মুসা সিঙ্গাপুরে একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য শাহরিয়ার মাহমুদ ইয়ামিন এ তথ্য জানান।
গত ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরার মেরাদিয়া হাট এলাকায় নিজ বাসার নিচে গুলিবিদ্ধ হয় মুসা ও তার দাদি মায়া ইসলাম (৬০)। তিনি মুসাকে আইসক্রিম কিনে দিতে বাসার নিচে নেমেছিলেন। সেসময় তারা দুজন গুলিবিদ্ধ হন এবং দাদি মায়া ইসলাম ঘটনাস্থলেই মারা যান। মুসা ওই এলাকার মুস্তাফিজুর রহমান ও নিশামণির একমাত্র সন্তান।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর শুরুতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে ঢাকা মেডিকেল ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয় মুসাকে। তবে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত ২২ অক্টোবর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুর পাঠানো হয় তাকে।
শাহরিয়ার মাহমুদ ইয়ামিন বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন মুসা হাত-পা নাড়ছে, চোখ খুলছে, বসতে পারছে। এটা আমাদের কাছে অবিশ্বাস্য লাগছে। আমার চোখে-মুখে কী পরিমাণ আনন্দ, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। মুসা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সবচেয়ে ছোট যোদ্ধা। এক বুলেট তার দাদির পেটের এক পাশ দিয়ে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে মুসার মাথায় লেগেছিল। দাদি ঘটনাস্থলে মারা গেলেও এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বেঁচে আছে মুসা। তার বেঁচে থাকাটা এক অলৌকিক ঘটনা।’
ইয়ামিন আরও বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে গিয়ে শুরুতেই করোনা ধরা পড়েছিল মুসার। এটা শুনে রীতিমতো কান্না আসছিল আমার। পরে করোনা থেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে পুরোদমে চিকিৎসা শুরু হয় এবং এখন আগের চেয়ে উন্নত। মুসাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর পেছনে দৌড়ঝাঁপ করার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। মুসাকে কেন আল্লাহ এখনও বাঁচিয়ে রেখেছেন, তা তিনিই ভালো জানেন। কোনোভাবেই যেন তার চিকিৎসা ব্যহত না হয়, সেদিকে সরকার সর্বোচ্চ নজর রাখছে। মুসা ফিরে আসুক সুস্থ হয়ে।’
সরকার প্রথম ধাপে অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ ছাড়া মুসার জন্য এককালীন ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা পাঠিয়েছে বলে জানান ইয়ামিন। তিনি বলেন, দ্বিতীয় ধাপে আরও এক কোটি টাকা পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া সরকারি খরচে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা চলছে তিন জনের। আরও ১০-১২ জনকে বিদেশে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।