নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে খাল দখল করে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে ইউনুস আলী ওরফে এরশাদ (৪০) নামের এক যুবদল নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গুচ্ছ গ্রাম ঘাটে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত এরশাদ চরফকিরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন এবং একই ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন। এরশাদ দিয়ারাবালুয়া গুচ্ছ গ্রামের রইছুল হকের ছেলে। তিনি পেশায় একজন নৌকার মাঝি এবং তিন সন্তানের বাবা।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে।
নিহতের নিহতের ভগ্নিপতি জয়নাল আবেদীন আলমগীর অভিযোগ করেন, গত ৬-৭ মাস আগে মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী (পলাতক) তার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মুছাপুর ক্লোজারের পশ্চিমের দায়ের খালটি ইজারা দেয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর খালটি দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠে স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতা। গত বুধবার বিকেলে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহজাহান ও বিএনপি নেতা বাবরের নির্দেশে স্থানীয় সমীর খাঁন, জাবেদ, ওবায়দুল্যাহ খানসহ ১০-১৫ জন দায়ের খালে জয়নালদের মাছ ধরার জালটি কেটে তাদের জাল বসিয়ে দেয়। খাল দখলকারীরা বলে, আওয়ামী সরকার এখন নেই। তাই তাদের সময়ে দেয়া ইজারা বাতিল। তারা খালটি দখলে নেয়।
জয়নাল আবেদীন আলমগীর আরও অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে তার পরিবার জাল কেটে খাল দখল করে মাছ ধরার বিষয়টি জিজ্ঞাসা করতে চরফকিরা ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রাম ঘাটে যায়। সেখানে স্থানীয় নিজাম (৪২), তার ছেলে সুজন (২৫) ও তারেক (২৬) এবং তাদের আত্মীয় তারেক (২৬) বাবলু (২৭) রুমনের (২৫ ) সঙ্গে তাদের বাগবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারিতে গিয়ে ঘটনা গড়ায়। পরবর্তীতে, নিজাম ও তার লোকজন ইউনুস আলী ওরফে এরশাদকে তলপেটে ছুরিকাঘাত করে। গুরুতর আহত এরশাদকে প্রথমে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম নেয়ার পথে ফেনীতে তার মৃত্যু হয়।
চরফকিরা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গোলাম রব্বানী বিপ্লব বলেন, বৃহস্পতিবার গুচ্ছ গ্রামের ঘাট এলাকায় একটি ভিটিতে মাটি ফেলাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। এর সঙ্গে মুছাপুরের খাল দখলের বিষয়টিও জড়িত রয়েছে।
ওসি গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।