ত্রিভুজ প্রেমের বলি হয়ে নিখোঁজের সাত দিন পর কলেজছাত্র সুমনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১১ নভেম্বর) মধ্যরাতে শেরপুর শহরের সজবরখিলা এলাকার একটি বাসার উঠোনে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় প্রেমিকা আন্নি ও তার প্রেমিক রবিনসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এর আগে সোমবার সকালে সুমনের বাবা নজরুল ইসলামের দায়ের করা মামলায় আন্নি ও তার বাবাকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে আরেক প্রেমিক রবিনের তথ্য বেরিয়ে আসে। পরে অভিযান চালিয়ে ময়মনসিংহ থেকে রবিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশের তথ্যমতে, শেরপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র সুমন মিয়া। একই কলেজের সহপাঠী আন্নি আক্তারের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের দুজনের একাধিক ছবি পাওয়া গেছে। তবে সুমন ছাড়াও একই সময়ে ময়মনসিংহ নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী রবিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান আন্নি। এক পর্যায়ে সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন রবিন ও আন্নি। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য স্বীকার করেছেন রবিন।
এদিকে গেলো ৪ নভেম্বর (সোমবার) বিয়ের কথা বলে সুমনকে ডেকে আনার পর প্রথমে শহরে বিয়ের কেনাকাটা সম্পন্ন করেন আন্নি। এরপর বিকেলে শহরের সজবরখিলা এলাকায় রবিনের বাসায় এনে সুমনকে হত্যার পর মাটিচাপা দেওয়া হয়।
ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি স্বজন ও স্থানীয়দের।
সুমনের খালা কল্পনা বলেন, সুমনকে আমি আমার ছেলের মতো করে বড় করছি। ওর কোনো আবদার আমি ফালাই নাই। আমরা অনেক বুঝাইছি, এই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার জন্য। আজকে এই ডাইনিটা আমার সুমনরে হত্যা করলো। আমি এর বিচার চাই।
এদিকে সুমনের নিখোঁজের ঘটনায় শেরপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে অভিযোগ করে খুঁজে পেতে সহায়তা চাওয়া হয়। পরে সোমবার রাতে মরদেহ উদ্ধারের পর তাদের পক্ষ থেকে বিচারের দাবি তোলেন সদস্যরা।
শেরপুরের পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি প্রেমঘটিত বলেই মনে হচ্ছে। তবে আমরা সুমনকে জীবিত উদ্ধার করতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করছি। তার মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে আরও অনুসন্ধানের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
পরিবারের তথ্যমতে, এসএসসি পরীক্ষায় একই কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার সময় সুমন ও আন্নির পরিচয় হয়। পরে তা প্রেমের সম্পর্কে গড়ালে দুজনই একই কলেজে ভর্তি হয়।