শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক আবহেও পরিবর্তন এসেছে। বদলেছে ভারত-বাংলাদেশে সীমান্তভিত্তিক আমদানি-রফতানির চিত্র। আগের বছরগুলোতে পূজার সময় উপহার হিসেবেও ইলিশ গেছে বাংলাদেশ থেকে। তবে এ বছর সে সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, সার্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কাছ থেকে ইলিশ মাছ পাওয়া বিষয়ে আপাতত আর আশার আলো দেখছেন না ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া পাইকারি মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা।
একটা সময় বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ যাওয়ার ক্ষেত্রে তেমন কড়াকড়ি ছিল না। তবে ২০১২ সাল থেকে ছবিটা বদলায়। তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার ভারতে ইলিশ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ধীরে ধীরে পশ্চিমবঙ্গে পদ্মার ইলিশ রফতানি কার্যত বন্ধই ছিল। ২০১৮ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক চুক্তির ফলে ফের ভারতে ইলিশ পাঠাতে রাজি হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেই থেকে প্রতি বছর দুর্গাপূজার আগে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ সরকার এক মাসের জন্য ৫০০০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির অনুমতি দিতো। মাছ ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, মাসে গড়ে ১০০০ থেকে ১২০০ মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি করতে পারতেন তারা। খাতা-কলমে ‘পূজার উপহার’ হিসেবে ধরা হতো তা।
এদিকে ভারতের ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন ইলিশ চেয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে আবেদন করেছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর ওই চিঠি লেখা হলেও, এখন পর্যন্ত কোনো উত্তর না পাওয়ার কথা জানিয়েছে সংগঠনটি।
ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের হাওড়া শাখার সেক্রেটারি সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ বলেন, তারা ফের চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে ইলিশ মাছ পাঠানোর জন্য অনুরোধ করবেন। তবে সংগঠনের পক্ষে জানানো হয়েছে, পদ্মার ইলিশ এবার আদৌ আসবে কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে।
অন্যদিকে ভারত বাংলাদেশকে ডিম পাঠালেও, ঢাকা কেন ইলিশ পাঠাবে না বলে প্রশ্ন তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের অনেক ব্যবসায়ী। উল্লেখ্য, যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গেল সোমবার ভারত থেকে ২ লাখ ৩১ হাজার মুরগির ডিম আমদানি করা হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে বন্দর দিয়ে আরও ৪৭ লাখ ডিম আমদানি করা হবে বলে জানা গেছে।