তীব্র লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন, মুক্তি মিলবে কবে?

আবারও দেশজুড়ে দুর্ভোগের কারণ লোডশেডিং। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্রাহকদের দিনে বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা করে। ঢাকার বাইরের চিত্র আরও দুর্বিষহ। দিনে কখনো লোডশেডিং ছাড়াচ্ছে দুই হাজার মেগাওয়াট। মূলত বড়পুকুরিয়া বন্ধ, আদানির কম সরবরাহসহ অর্ধশতাধিক কেন্দ্রে জ্বালানি সংকটেই দেখা দিয়েছে তীব্র লোডশেডিং।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, মধ্যদুপুরে বিপণিবিতানগুলো ভুতুড়ে পরিবেশ। বিদ্যুৎ না থাকায় থমকে গেছে স্বাভাবিক কর্মতৎপরতা, কমে গেছে বিক্রিবাট্টাও। কেউ বিকল্প উপায়ে কাজ চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন প্রতিনিয়ত।

রাজধানীবাসী বলছেন, কয়েকদিন ধরে হঠাৎই বেড়েছে লোডশেডিং। অসহনীয় গরমে দিনে কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায়, চরম অতিষ্ঠ করে তুলছে যাপিত জীবন তাদের।

সাম্প্রতিক সময়ে ১৪ থেকে ১৬ হাজার মেগাওয়াটেই ঘুরপাক খাচ্ছে বিদ্যুৎ চাহিদা। তারপরও কখনো কখনো লোডশেডিং ছাড়াচ্ছে দুই হাজার মেগাওয়াটে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে ২৭ হাজার উৎপাদন সক্ষমতা থাকার পরও কেনো তীব্র লোডশেডিং?

বিদ্যুৎ সংকটের মূল কারণ জ্বালানির অভাব। অন্তত ৫৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র ধুঁকছে গ্যাস ও জ্বালানি তেলের সংকটে। কয়লার অভাবে ঝুঁকিতে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। উৎপাদন কমেছে আদানির। আর যান্ত্রিক ত্রুটি ও কারিগরি সমস্যায় বন্ধ বড়পুকুরিয়া, রামপালের প্রথম ইউনিটসহ ৪১টি বিদ্যুৎকেন্দ্র।

তিন মাস ধরে রক্ষণাবেক্ষণে থাকা সামিটের এলএনজি টার্মিনাল তীব্র করেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের অভাব। সংকট কমাতে ভাসমান এ টার্মিনালের উৎপাদনে ফেরার অপেক্ষায় বিদ্যুৎ বিভাগ।

পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বলেন, ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট বা এফএসআরইউ আসলেই আমাদের বিদ্যুতের সমস্যাটা থাকবে না। এটা আসলেই আমাদের সমস্যাটা ৯০ ভাগ শেষ হয়ে যাবে। আমরা চেষ্টা করছি, হয়তো এক সপ্তাহের মধ্যে এই জিনিসগুলোর অনেকটাই সমাধান হবে আর কী।

অবশ্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এতো দিনের নানা ভুলনীতি আর জ্বালানির সংস্থান না করেই ঢালাও বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির মাশুল দিতে দিচ্ছে দেশবাসীকে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, একটা হচ্ছে পরিকল্পনার সমস্যা। আর যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো করা হয়েছে, সেগুলো যে আমাদের প্রয়োজন, সেটাও কিন্তু নয়।আবার এর সাথে জ্বালানি নিশ্চিত করা হয়নি। আমাদের যে চাহিদা, সেটার ভিত্তিতে পাওয়ার প্লান্ট করা উচিৎ, কিন্তু কখনও তারা এটা করেনি।

এ বিশেষজ্ঞর পরামর্শ, আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে নজর দিতে হবে নবায়ণযোগ্য উৎসে।

Scroll to Top