রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড়ি এলাকায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদের ছোট ভাই এরশাদ মাহমুদের অবৈধ দখলে রয়েছে প্রায় ২২০ একর বনভূমি। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে গত ১৫ বছর ধরে এসব বনভূমি দখলে রেখে মৎস্য চাষ, মাল্টার বাগান, পুকুর, ডেইরি ফার্ম, রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করে ভোগ দখল করছেন। ক্ষমতার দাপটের কারণে এসব অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে বন বিভাগের কর্মকর্তারা ছিলেন অসহায়। এখন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বন বিভাগ অবৈধ দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে। দুই দফায় ১০৫ একর বনভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়।
রাঙ্গুনিয়া, সুখবিলাস, দশমাইল ও খুরশিয়াসহ আশপাশের বিশাল পাহাড়ি এলাকা নিয়ে রয়েছে বনভূমি। সড়কের পাশে থাকা বনভূমির ওপর নজর পড়ে এরশাদ মাহমুদের। গত ১৫ বছর যাবত রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ও আশপাশের এলাকায় সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটায় এরশাদ মাহমুদ। দখল করা এসব বনভূমি সড়কের কাছাকাছি। যোগাযোগের ব্যবস্থাও ভালো। গত সোমবার প্রথম দফায় সুখবিলাস এলাকায় প্রায় ৫৫ একর বনভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়। এখানে ছিল চার-পাঁচটি গোয়ালঘর, তিনটি পুকুর, পার্ক, রেস্টুরেন্ট। পুকুরগুলোতে মাছ চাষ করা হতো। গতকাল বুধবার দ্বিতীয় দফায় আরও ৫০ একর বনভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়।
জানতে চাইলে বিভাগীয় বন সংরক্ষক (দক্ষিণ) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এরশাদ মাহমুদ প্রায় ২২০ একর বনভূমি অবৈধ দখলে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ করছেন। বন বিভাগের এসব জায়গায় পুকুর, পার্ক, মাল্টার বাগান, গাছের বাগান, ডেইরি খামারসহ নানা আয়বর্ধক স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। প্রথম দিন ৫৫ একর অবৈধ জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে। বুধবার আরও ৫০ একর দখলমুক্ত করা হয়।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ দুটি বন বিভাগ রয়েছে। এই দুটি বন বিভাগের আওতায় প্রায় ৩ লাখ একর বনভূমি রয়েছে। বন বিভাগের বিপুল পরিমাণ বনভূমি অবৈধ দখলে নিয়ে ভোগ করছে প্রভাবশালীরা। তাদের সঙ্গে বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে। এসব অবৈধ দখলদারের তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসনের কাছে দেওয়া হয়েছে। তার পরও অবৈধ দখলমুক্ত হয়নি বন বিভাগের এসব বনভূমি।