পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আনসার উদ্দিন মোল্লা হামলায় আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ইউপি কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আনসার উদ্দিন মোল্লা অভিযোগ করেন, বিএনপি-জামায়াতের নেতা–কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাঁর ওপর হামলা করেছেন। হামলার পর তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গতকাল রাতেই তাঁকে বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘আমি ইউনিয়ন পরিষদের দোতলায় কার্যালয়ে বসে কাজ করছিলাম। দুর্বৃত্তরা ভবনটির নিচে অবস্থান করছিল। ৪০-৫০ জনের হাতে লাঠিসোঁটা ছিল। বুঝতে পেরে আমি দৌড়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের তিনতলায় গিয়ে একটি কক্ষে আশ্রয় নিই। সেখানে দুর্বৃত্তরা আমার ওপর হামলা চালায়। ওরা আমাকে বেধড়ক পিটিয়েছে। আমার ডান পা ভেঙে গুঁড়া করে দিয়েছে।’
লতাচাপলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনসার উদ্দিন মোল্লা অভিযোগ করেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের লোকেরা এ হামলার সঙ্গে জড়িত। হামলাকারীদের আমি চিনতে পেরেছি।’ তবে এখনই তাঁদের নাম বলতে চাননি তিনি।
তবে মহিপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান পারভেজ বলেন, ‘আনসার মোল্লার প্রতি আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ আগে থেকেই ক্ষিপ্ত ছিল। এ কথা এলাকার সবাই জানেন। কয়েক মাস আগে তিনি নিজ দলের সন্ত্রাসীদের দ্বারা হামলার শিকার হয়েছিলেন। আবারও একই ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে আমাদের দলের কোনো কর্মী জড়িত নন।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে আনসার উদ্দিন মোল্লা আত্মগোপনে ছিলেন। কয়েক দিন আগে তিনি এলাকায় ফেরেন। গতকাল তিনি লতাচাপলী ইউনিয়নের আলীপুর বন্দরে অবস্থিত ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যান এবং দাপ্তরিক কাজ শুরু করেন। বিকেলে একদল লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত হয়। আনসার উদ্দিন মোল্লা আত্মরক্ষার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটির তিনতলায় গিয়ে আশ্রয় নেন। সেখানেই তিনি হামলার শিকার হন।
এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি লতাচাপলী ইউনিয়নের আলীপুর বন্দরে আনসার উদ্দিন মোল্লার ওপর হামলা হয়েছিল। তখন লতাচাপলী ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা নজরুল ফকিরের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ ওঠে। সন্ত্রাসীরা তাঁর দুই পা হাতুড়ি দিয়ে থেঁতলে দেয়। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানেও জখম হয়।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল এবং ইউপি চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এখন ওই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।