মৌলভীবাজারে বিপৎসীমার নিচে তিন নদ-নদীর পানি, স্বস্তিতে বাসিন্দারা

মৌলভীবাজারে প্রধান তিন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে নামতে শুরু করায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে শুরু করেছে। আজ সোমবার সকালে জেলার প্রধান নদ-নদীর মধ্যে মনু ও ধলাই নদ এবং কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মৌলভীবাজার কার্যালয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

পাউবো মৌলভীবাজারের বন্যা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আজ সকাল নয়টায় মনু নদের পানি রেলওয়ে ব্রিজের কাছে বিপৎসীমার ২৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং মৌলভীবাজার শহরের কাছে চাঁদনীঘাটে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একইভাবে কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুরে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ধলাই নদের পানি রেলওয়ে সেতুর কাছে প্রবাহিত হচ্ছিল বিপৎসীমার ৩৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে। শুধু জুড়ী নদীর পানি ভবানীপুর এলাকায় ১৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

জেলার মনু ও ধলাই নদ, সম্প্রতি জেলার মনু ও ধলাই নদ এবং জুড়ী ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়েছিল। বিভিন্ন স্থানে ধলাই নদের বাঁধ ভেঙে জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। অন্যদিকে মনু নদের সেকেন্ডারি বাঁধ (মনু নদসংলগ্ন পাড়) ভেঙে কুলাউড়া এবং মনু নদের সেকেন্ডারি বাঁধ ও মনু নদ প্রকল্পের বাঁধ ভেঙে রাজনগরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে জানায় পাউবো।

অন্যদিকে মনু নদের পানি বিপৎসীমার অনেক ওপরে চলে যাওয়ায় মৌলভীবাজার শহরে বন্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। শহর প্রতিরক্ষা বাঁধ উপচে শহরে পানি ঢুকতে শুরু করলে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। ফলে প্রধান নদ-নদীর পানি কমার খবরে তাঁদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।

পাউবো মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আমি কুলাউড়া, রাজনগর, কমলগঞ্জসহ কয়েকটি জায়গা ঘুরে দেখেছি। পানি অনেকটা নেমে গেছে। তিনটি নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে চলে এসেছে।’

বন্যা–পরবর্তী ভাঙা বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে জানিয়ে পাউবোর এই কর্মকর্তা বলেন, কুলাউড়ায় মনু নদের আশ্রয়গ্রাম ও রাজাপুরে এবং কমলগঞ্জের ঘোড়ামারায় ধলাই নদের বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে ৫১টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা বন্যাকবলিত হয়েছে। বন্যা আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৫৭ হাজার ৯৯৩ জন। এর মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেন ১০ হাজার ৯১৭ জন। বন্যার্তদের মধ্যে ৮২৬ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

Scroll to Top