প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার বাসার পিয়ন ছিল। সেও এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। পরে তাকে ধরা হয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে হাত যখন দিয়েছি, ছাড়বো না। আপন পর জানি না, জিরো টলারেন্স মানে, জিরো টলারেন্স। রোববার (১৪ জুলাই) বিকেল ৪টায় গণভবনে সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, পিএসসির গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী অঢেল সম্পদের মালিক। গাড়িচালক কীভাবে এত টাকার মালিক হলেন। তাদের অপকর্ম আমরা ধরছি বলেই তো এখন জানতে পারছেন। এতদিন তো আপনারা জানতে পারেননি।
সরকারপ্রধান বলেন, প্রথমে আমরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। এখন জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে, তাদের থামিয়েছি। এখন আমরা দুর্নীতি নিয়ে কাজ করছি। দুর্নীতবাজদের ধরছি। এটা চলতে থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা গুলি-বোমা খেয়ে অভ্যস্ত। কিন্তু যারা গণতন্ত্রের জন্য গর্ব করে, এতো বড় প্রবক্তা ও সভ্য দেশ। তাদের দেশে এমন ঘটনা কেন।
শেখ হাসিনা বলেন, চীন আমাদের কিছুই দেয় নাই, ভারতের সঙ্গে আমরা গোলামি চুক্তি স্বাক্ষর করে এসেছি; কিছু মানুষের মুখ থেকে এগুলো আমাদেরকে নিয়মিত শুনতে হচ্ছে। এগুলো হলো সম্পূর্ণ মানসিক অসুস্থতা।
তিনি বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ, রেয়াতি ঋণ ও বাণিজ্যিক- এই চার ধরনের আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিলেছে। এই চারটি প্যাকেজের আওতায় চীন বাংলাদেশকে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমান অর্থ প্রদানে সম্মত হয়েছে।
আগামী বছর বাংলাদেশ ও চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে- সে কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’, এটিকে মূলনীতি হিসেবে ধরে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সফলভাবে তার কূটনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে চলছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা, ফিলিস্তিন সঙ্কট, মানবাধিকার, টেকসই উন্নয়ন, জাতিসংঘ প্রভৃতি ক্ষেত্রে বৈশ্বিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ও চীন পারস্পরিক সহায়তার মাধ্যমে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
সরকারপ্রধান বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে চীনের রাষ্ট্রপতি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের অবস্থা এবং তাদের সমস্যার প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে এর সমাধানে আমি চীনের সহযোগিতা কামনা করি। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ ও চীনের পারস্পরিক সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে উভয় পক্ষ আশাবাদ ব্যক্ত করি।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের দাবি পাঠিয়েছে। তাদের কিছু ভ্রান্ত ধারণাও আছে। সর্বজনীন পেনশন সবার জন্য। আন্দোলন যখন চালাতে চায়, চালাতে থাক। যখন আন্দোলন করতে করতে টায়ার্ড হবে, তখন বলবো।
শেখ হাসিনা বলেন, ২৪তম বিসিএস পরীক্ষা হয়েছিল ২০০২ সালে। বিএনপির আমলে সেই সময়ে যত পরীক্ষা হতো, চাকরি হতো, সব হাওয়া ভবন থেকে তালিকা পাঠানো হতো। সেই তালিকা অনুযায়ী চাকরি হতো। ঢাকা কলেজে সেই সময় একটা বিশেষ কামরা রাখা হতো। সেখানে বসে তাদের লোক পরীক্ষা দিতো। তাদেরই চাকরি হতো। কোনো উচ্চবাচ্য সেসব কিন্তু নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রশ্নফাঁস করে নিজেদের লোককে চাকরি দেয়াটা সেই জিয়ার আমল থেকে শুরু হয়েছিল। খালেদার আমলে সেটা চলেছে। আমরা এটা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছি এবং সফল হয়েছি। কোটা বাতিলের পর অনেকে চাকরিতে ঢুকে গেলো। তারা এখন অনেক জায়গায় বসে এসব প্রশ্নফাঁসসহ বিভিন্ন অপকর্ম করছে।