ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাশিয়া সফর ঘিরে আগেই কড়া বার্তা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এবার সরাসরি নয়াদিল্লিকে ‘হুমকি’ দিয়ে ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেটি বলেছেন, ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব গভীর। কিন্তু এতটাও গভীর নয় যে ওয়াশিংটনকে ‘অগ্রাহ্য’ করতে পারে নয়াদিল্লি।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর সম্প্রতি প্রথমবার রাশিয়া সফরে যান নরেন্দ্র মোদি। সেখানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বুকে জড়িয়ে ধরেন। কিন্তু সেই দৃশ্য দেখে ক্ষুব্ধ শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তারা। কারণ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে চলছে ন্যাটো সম্মেলন।
ঠিক সেই সময়েই মস্কো সফরে গিয়ে রাশিয়াকে ভারতের সব সময়ের বন্ধু বলে অভিহিত করেন মোদি। তাতেই ক্ষিপ্ত যুক্তরাষ্ট্র।
ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মোদির রাশিয়া সফর বাইডেন প্রশাসনের পক্ষে মেনে নেয়া কঠিন। বিশেষ করে এমন সময়ে মোদি রাশিয়ায় গেছেন, যা মার্কিন রাজনীতিক মহল মোটেই ভালোভাবে নিচ্ছেন না। কারণ ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে ন্যাটো সম্মেলনে। আর সেই সময়েই যুক্তরাষ্ট্রের ‘বন্ধু’ মোদি জড়িয়ে ধরেছেন ইউক্রেনে অভিযান শুরু করা পুতিনকে।
প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, চলতি মাসের শুরু দিকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ডেপুটি সচিব কার্ট ক্যাম্পবেল। ন্যাটো সম্মেলনের মধ্যে মোদি রাশিয়ায় যাবেন না, দুই পক্ষের আলোচনার পর এমনটাই আশা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব গভীর হলে ভারতকে ‘ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হবে’ বলে বার্তা দিয়েছেন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভ্যান।
তিনি বলেন,
রাশিয়াকে দীর্ঘমেয়াদি বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু হিসাবে ধরে নেয়া মোটেও লাভজনক পদক্ষেপ নয়। কারণ, রাশিয়া চীনের ঘনিষ্ঠ। যেকোনো দিন ভারতের বিরুদ্ধে তারা সমর্থন করবে বেইজিংকে।
আর রাশিয়া সফর শেষে মোদি দেশে ফিরতেই আরও আক্রমণাত্মক বার্তা দিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন,
ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব আগের থেকেও অনেক বেশি দৃঢ়। কিন্তু বন্ধুত্ব এতটাও গভীর হয়নি যে ভারত ওয়াশিংটনকে অগ্রাহ্য করতে পারে।
সবমিলিয়ে, মোদির এই রাশিয়া সফরের জেরে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।