গাজায় ৯ মাস ধরে ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর আগ্রাসনে নারী ও শিশুসহ এ পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৩শর মতো ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত এবং পঙ্গুত্ববরণ করেছেন প্রায় ৮৮ হাজার। তারই জেরে এখন যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ে মধ্যস্থাকারীদের মাধ্যমে হামাস ও ইসরাইলি প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা চলছে।
এরই মধ্যে এবার আলোচনায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনীতে তুর্কি নাগরিক থাকার বিষয়টি।
জানা গেছে, যে সব তুর্কি নাগরিক ইসরাইলি বর্বর বাহিনীতে কাজ করছেন এবং যারা গাজায় বর্বর আগ্রাসনে জড়িত রয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তুরস্কের জাতীয় সংসদে বিল উত্থাপন করা হয়েছে।
‘টার্কিশ ফ্রি কজ পার্টি’ কুর্দি প্রভাবিত ও ইসলামপন্থী দলটির নেতা সার্কান রামানলি বুধবার তুর্কি সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর বলেছেন, তুরস্কের যেসব নাগরিক ইসরাইলে দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে বসবাস করেন এবং যারা গাজায় বর্বর আগ্রাসনে যুক্ত, তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি, তুর্কি-ইসরাইলি দ্বৈত নাগরিকদের সম্পদ জব্দ করার দাবিও জানানো হয়েছে ওই বিলে।
রামানলি বলেন, আমরা মনে করি, তুর্কি-ইসরাইলি দ্বৈত নাগরিক যারা গাজায় মানবতা-বিরোধী অপরাধে জড়িত, তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া উচিত। এজন্য আমরা সংসদে এই বিল উত্থাপন করেছি।
তুরস্কের এ নেতা বলেন, আন্তর্জাতিক চুক্তি ও কনভেনশন অনুসারে আমাদের অবশ্যই সক্রিয়ভাবে গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। কিন্তু তুরস্কের আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা কিসের জন্য দীর্ঘ ৯ মাস অপেক্ষা করলাম?
সেইসঙ্গে তুর্কি-ইসরাইলি দ্বৈত নাগরিকদের কাছ থেকে জব্দ করা সম্পদ অসহায় পরিবারগুলোর মাঝে বিতরণ করে দিতে হবে বলেও দাবি করেন রামানলি।
বিলটি আইনে পরিণত হলে তা ইসরাইলে কর্মরত কতজন তুর্কি সেনার ওপর প্রভাব ফেলবে, তা পরিষ্কার নয়। কারণ ইসরাইলের সামরিক বাহিনীতে কাজ করা এ ধরনের দ্বৈত নাগরিকদের সংখ্যা স্পষ্ট নয়।
এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকাও দেশটির দ্বৈত নাগরিকদের বিরুদ্ধে একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছে, যারা ইসরাইলের সামরিক বাহিনীতে কাজ করছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা বলেছে, ইসরাইলি সামরিক বাহিনীতে কাজ করা নাগরিকরা দেশে ফিরলে তাদের আটক করা হবে।
এদিকে তুরস্কের পার্লামেন্টে উত্থাপিত তুর্কি-ইসরাইলি দ্বৈত নাগরিকদের সম্পর্কিত বিলটির ওপর শিগগিরই ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। সূত্র: টাইমস অব ইসরাইল