সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনকে একটি মহল সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দেয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, এ আন্দোলনকে যদি কেউ রাজনীতির ফাঁদে ফেলতে চায়, সেটা আমরা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করব।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমসাময়িক ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক।
শিক্ষার্থীদের ধৈর্যশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, এ মুহূর্তে কোনো প্রকার কোটা সংরক্ষিত নেই। এ বিষয়ে আপিল বিভাগ চূড়ান্ত নিষ্পত্তি দেবেন।
বিএনপির সমালোচনা করে কাদের বলেন, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য ইন্দন দিচ্ছে। বিএনপিসহ কিছু দল প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছে। এটাকে পলিটিসাইজ করা শুরু করেছে তারা। এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক ফাঁদে ফেলে তাদের অতীতের আন্দোলনের ব্যর্থতার পেছনে রেখে নতুন করে পাঁয়তারা করছে। এই আন্দোলনকে সরকারবিরোধী অন্দোলনে রূপ দেয়ার চেষ্টা করছে। বিএমপির মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান নেই। মানে তারা এতদিন মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধেই ছিল। তাদের আদালতের প্রতি সম্মান রাখা উচিত।
আন্দোলনের নামে জনগণের চলাফেরায় বাধা সৃষ্টি করা বেআইনি উল্লেখ করে কাদের বলেন, আন্দোলনের নামে তারা জনগণকে জিম্মি কর অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড রাষ্ট্র বা দেশ বা জনগণের জন্য কল্যাণকর নয়। বলপ্রয়োগ রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে এমন রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি কোনো প্রকার সম্মান না রেখেই তথাকথিত বাংলা ব্লকেড দিয়ে স্বাভাবিক জীবনাযাত্রা ব্যাহত করার চেষ্টা করছে তারা।
কোট বাতিলের পর নারীরা পিছিয়ে পড়েছে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিসিএস পরীক্ষার ফল পর্যালোচনা করলেই দেখা যায়, কোট বাতিলের পর নারীরা পিছিয়ে পড়েছে। তারা ৩.৩৪ শতাংশে নেমে এসছে। পুলিয়া ক্যাডারে মাত্র ৪ জন, ফরেইন ক্যাডারে ২ জন, ২৪ জেলার কোনো প্রার্থী পুলিশ ক্যাডারে চাকরি পায়নি। কোনো কোনো পরীক্ষায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির একজনও চাকরি পায়নি। তাই কোটার দরকার আছে। কোটা মানে বৈষম্য নয়, বৈষম্য নিরসনের জন্য কোটা প্রয়োজন।
আদালতের আদেশের পর সরকার সিদ্ধান্ত নেবে জানিয়ে কাদের বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সব কর্মসূচি বন্ধ করে, সর্বোচ্চ আদালতের ওপর আস্থা রেখে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়া অনুরোধ জানাচ্ছি। কেউ যদি অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায়, তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারুণ্যকে ব্যবহার করে কেউ যেন ফাঁয়দা হাসিলের চেষ্টা না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তারুণ্যকে ক্ষুদ্র স্বার্থে ব্যবহৃত না করে দেশের স্বার্থে ব্যবহার করতে হবে।