ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গীতে উদ্বোধনের দুই বছরের মাথায় ব্রিজের মূল অংশ দেবে (ধসে) গেছে। এমনকি ব্রিজের বিভিন্ন অংশে ধরেছে ফাটল। এতে আতঙ্কে আছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ‘বালিয়াডাঙ্গী (ডাঙ্গী) থেকে হরিণমারী জিসি বায়া আধারদীঘী হাট রাস্তার নহনা নদীর ওপর গত ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ৪৫ মিটার পিসি গার্ডার ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়।
ব্রিজের নেমপ্লেটে দেখা যায়, রংপুর বিভাগ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প ( জউজওওচ-২) এর অধীনে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ২৭ লাখ ৬৪ হাজার ৫শ ৬৩ টাকা। বালিয়াডাঙ্গী এলজিইডির ব্যবস্থাপনায় ব্রিজটির নির্মাণ কাজে ঠিকাদার ছিলেন রংপুর গুপ্তপাড়ার খায়রুল কবির রানা।
ব্রিজটি উদ্বোধন করা হয় ২০২২ সালে। উদ্বোধনের কিছুদিন যেতে না যেতেই ব্রিজে ধস ও ফাটল দেখা দেওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
এই ব্রিজ দিয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়বাড়ী, আমজানখোর,বড়পলাশবাড়ী ও পাড়িয়া ইউনিয়নের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র উত্তম রাস্তা এটি।
নহনা নদীর ব্রিজের পশ্চিমে ইট ভাটা এবং আধারদীঘী হাট, মোড়ল হাট, স্কুল হাট, হরিণমারীহাট ও পাড়িয়া হাটসহ বড় বড় কয়েকটি হাট বাজার থাকায় প্রতিদিন ব্রিজটির ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করে।
ডাঙ্গী বাজারের কৃস্ট মোহন সিংহ জানান, এতো অল্প সময়ে ব্রিজ ধসে যাওয়া নিয়ে আমরা আতঙ্কিত। কখন যে দুর্ঘটনা ঘটবে। আমরা ভয়ে আছি।
বড়বাড়ী ইউনিয়নের গোয়ালকারীর ফজলুর রহমান বলেন, ব্রিজের মাঝখানে ধসে যাওয়া স্থানে কয়েকদিন লাল কাপড় দিয়ে রেখেছিল। এখন ওই লাল কাপড়ও নেই। ধসে যাওয়া জায়গাটা মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
বড়বাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আকরাম আলী জানান, ঠিকাদার কেমন কাজ করেছে যে, এতো অল্প সময়ে ব্রিজে ফাটল ও ধসে যাওয়ার ঘটনা ঘটল। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সফিকুল ইসলাম বলেন, ব্রিজের কাজটি কেন এমন হলো, এটি আইনশৃঙ্খলা সভা ও উন্নয়ন সভায় তোলা হবে। এ ব্যাপারে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী মমতাজুর রহমান জানান, ব্রিজের জামানতের টাকা ইতোমধ্যে ঠিকাদার ফেরত নিয়ে গেছেন। ব্রিজের মূল অংশে দেবে যাওয়া ও ফাটলের বিষয়ে ঠিকাদারকে জানানো হয়েছে। ঠিকাদার মেরামত করে দিবেন মর্মে জানিয়েছেন।
ঠাকুরগাঁও নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন বিশ্বাস জানান, বর্তমানে যে ব্রিজগুলো হচ্ছে, তার স্থায়িত্ব হবে কমপক্ষে ৭৫ বছর। এতো অল্প সময়ে ব্রিজের মূল অংশ কেন ধসে গেছে, তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।