গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) চলমান অভিযানে গত ৯ মাসে ৩৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা সাময়িকী ল্যানসেটের মতে, এই সংখ্যা আরও বেশি, প্রকৃত মৃতের সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৮৬ হাজার।
সম্প্রতি ল্যানসেটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দাপ্তরিকভাবে ৩৮ হাজারের অধিক নিহতের সংখ্যা প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু সেখানে ইসরাইলি বাহিনীর গোলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া এবং গাজায় গত ৯ মাসে খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবার অভাবে মৃতদের হিসাবে ধরা হয়নি। যদি এদেরকে ধরে নিয়ে হিসাব করা হয়, তাহলে মোট নিহতের সংখ্যা প্রায় ২ লাখে পৌঁছাবে।
ল্যানসেটের প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে, যুদ্ধের সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় খাদ্য সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা। ফলে যারা সরাসরি গুলি বা গোলার আঘাতে নিহত হন, তাদের তুলনায় খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবার অভাবে মৃতের সংখ্যা বেশি থাকে। গাজায় গত ৯ মাসে ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানে যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, তাতে এই মুহূর্তে যদি যুদ্ধ বন্ধও হয়, তাহলেও আরও বেশ কিছুদিন গাজায় মৃত্যুর মিছিল অব্যাহত থাকবে।
প্রবন্ধে আরও বলা হয়েছে, আধুনিক যুগের যুদ্ধ-সংঘাতে গুলি বা গোলার আঘাতে যত মানুষ সরাসরি নিহত হন, পরোক্ষভাবে নিহত হন তারচেয়ে তিনগুণ বা ১৫ গুণ বেশি মানুষ। একটি সাধারণ স্বীকৃত সিদ্ধান্ত হলো— প্রতি একজন সরাসরি নিহতের সঙ্গে পরোক্ষ নিহতের সংখ্যা থাকে অন্তত চারজন। আমরা এই হিসাবই এখানে প্রয়োগ করেছি।
ল্যানসেটের তথ্যমতে, গাজার মোট জনসংখ্যা ২৩ লাখ এবং ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা হিসেবে ধরলে বলা যায়, গত ৯ মাসে গাজায় মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ প্রাণ হারিয়েছে। যুদ্ধের প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসাব এবং বিবদমান পক্ষগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হলে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা জানা জরুরি। আইনগত দিক থেকেও এটি গুরুত্বপূর্ণ, ল্যানসেট জানিয়েছে।