বৈদেশিক মুদ্রা সংকট পূরণে যখন দাতাগোষ্ঠীর কাছে ঋণের পরিমাণ বাড়ছে, তখন বন্ডের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স বাড়ার সুযোগ কেন সীমিত করে রেখেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগে ৮ কোটি টাকা মূল্যের বন্ড কেনার সুযোগ থাকলেও এখন তা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক কোটিতে। এতে অতিরিক্ত ডলার ফেরত নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। যার প্রভাব পড়ছে রিজার্ভে। ব্যাংকাররা বলছেন, নানা শর্তের কারণে ডলারে বিনিয়োগ কমছে প্রবাসীদের। আর এর পুরো দায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাঁধে চাপাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রেমিট্যান্স দিয়ে বন্ড কেনায় নেই প্রণোদনা সুবিধা। বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েও বন্ডে এক কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগের সুযোগ নেই, যা আগে ছিল সর্বোচ্চ ৮ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র থাকলে বাদ যাবে এক কোটির হিসেব থেকে। তুলে দেয়া হয়েছে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) সম্মাননাও।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কম থাকায় যেখানে শত শত কোটি ডলারের ঋণে জর্জরিত হচ্ছে দেশ, তখন অবাধ ডলার প্রবাহে প্রবাসীদের সুবিধা বাড়ানোর আছে যৌক্তিকতা। কিন্তু কেউ রেমিট্যান্স দিয়ে বন্ড কিনলে দেয়া হয়েছে নানা শর্ত। এতে কতটা স্বাস্থ্যকর হচ্ছে রিজার্ভ ও অর্থনীতি?
সোনালী ব্যাংক পিএলসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রবাসীদের বিনিয়োগের অন্যতম আর্কষণ ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড। কিন্তু এনআইডি থাকা, সীমা বেঁধে দেয়া এবং নবায়ন করতে না পারাসহ নানা জটিলতায় বিমুখ হচ্ছেন অনেকে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, দূরদর্শিতার অভাব রয়েছে নীতি নির্ধারকদের। প্রবাসীদের আকৃষ্ট করতে দিতে হবে উচ্চ মুনাফা। অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবির বলেন, মানুষকে বন্ডমুখী করতে হলে মুনাফার হার বাড়াতে হবে। কমাতে হবে জটিলতা।
এদিকে, ডলারের মজুত বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা উদ্যোগের কথা জানিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন,
প্রবাসীদের সঞ্চয় বন্ডের নীতি পরিবর্তনের দায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের। কারণ অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বন্ডের নীতিমালা তৈরি করেন। সেই অনুযায়ীই বাংলাদেশ ব্যাংক বন্ড পরিচালনা করে থাকে।
উল্লেখ্য, বতর্মানে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডে সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড ও ডলার প্রিমিয়াম বন্ডে প্রবাসীরা পাচ্ছেন যথাক্রমে সর্বোচ্চ ৬ ও সাড়ে ৭ শতাশ মুনাফা।