quota

অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে মূল ধারায় আনতে কোটার বিকল্প নেই: বিশেষজ্ঞরা

সরকারি চাকরিতে কোটায় প্রার্থী পাওয়া না গেলে তা মেধাতালিকা থেকে পূরণের বিধান রেখেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ফলে কোটা থাকলেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হবেন না বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ ও সাবেক আমলারা। তারা বলছেন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূল ধারায় আনতে কোটার বিকল্প নেই।

এমনকি দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য থাকতে পারে কোটা, তবে তা সংস্কার করে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসার পরামর্শ তাদের।

আদালতের রায়ে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আবারও মাঠে নেমেছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। তাদের দাবি, এই ব্যবস্থার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হবেন।

তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালে জারি করা এক প্রজ্ঞাপন বলছে, সরকারি চাকরিতে কোটায় প্রার্থী পাওয়া না গেলে তা মেধাতালিকা থেকে পূরণ করার বিধান রয়েছে।

২০১৮ সালের আগে তিনটি বিসিএসে কোটা বিদ্যমান থাকলেও অধিকাংশ পদ পূরণ করা হয়েছে মেধাতালিকা থেকে। এর মধ্যে ৩৩তম বিসিএসে এই ব্যবস্থার কারণে ৭৭ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রার্থী মেধা কোটায় নিয়োগ পেয়েছেন। ৩৫তম বিসিএসে ৬৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং ৩৬তম বিসিএসে ৭০ দশমিক ৩৮ শতাংশ মেধা কোটায় নিয়োগ পেয়েছেন। অর্থাৎ এই পরীক্ষাগুলো হয়েছিল কোটা বহাল থাকার সময়।

এ বিষয়ে শিক্ষাবিদরা বলছেন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূল প্রবাহে অন্তর্ভুক্ত করতে কোটা জরুরি। তবে সময়ের ব্যবধানে কোটার পরিমাণ কমানো বা সংস্কার করা যেতে পারে।

শিক্ষাবিদ মেসবাহ কামাল বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে নারীরা সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে গেছে, কোটা পদ্ধতি তুলে দেয়ার কারণে। আদিবাসী বা প্রতিবন্ধীরা চাকরির ক্ষেত্রে কোথাও নেই পাঁচ বছরে। কারণ, তাদের সুবিধাটা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কাজেই এটাকে (কোটা) অবশ্যই পুনঃপ্রবর্তন করা দরকার।’

সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান‌ বলেন, ‘কোটায় ছিল কিন্তু দেখা গেছে মেধা কোটায় ৪৪-এর জায়গায় ৮০ শতাংশ এসেছে। কোটাধারীদের কিন্তু রিটেন পরীক্ষায় পাস করতে হয়, সুতরাং তারা মেধাবী নন–এ রকম বলে দেয়া, কনক্লুড করে দেয়া সত্য নয়। এখন মেধার মাপকাঠিতে হয়তো তারা পয়েন্ট জিরো জিরো ওয়ান পারসেন্ট কম নম্বর পেয়েছেন, এ জন্য তারা পেছনে আছেন। এটা নিয়ে আমরা আর্গুমেন্ট করতে পারি।’

এ ছাড়া প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর কোটা প্রয়োগ হয়। তাই কোটায় নিয়োগ পাওয়ারাও মেধাবী ও চাকরি পাওয়ার যোগ্য বলে মনে করেন তিনি।

Scroll to Top