ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনাল। মুখোমুখি ফ্রান্স-পর্তুগাল। মঞ্চ প্রস্তুত এমবাপ্পে ও রোনাল্ডোর কাউকে বিদায় জানাতে। কিন্তু বিদায় নিতে কে চায় বলুন। রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক ও বর্তমানের লড়াইটা চলল ১২০ মিনিট। তবে গোল পেল না কোনো দলই। শেষটাই ভাগ্য নির্ধারণী টাইব্রেকারে গেল ম্যাচটা। যেখানে সবশেষ ম্যাচে রোনাল্ডোদের টেনে তুললেও এ ম্যাচে আর পারলেন না দিয়েগো কস্তা। ৫-৩ গোলে ফ্রান্সের বিপক্ষে হারতে হতো পর্তুগালকে। যেই হারে থামল পর্তুগালের ইউরো যাত্রা। এমবাপ্পের ফ্রান্স উঠে গেল সেমিফাইনালে।
পর্তুগালের এমন বিদায়ে শেষ হলো রোনাল্ডোর ইউরো অধ্যায়। ইউরো শুরুর আগেই রোনালদো জানিয়েছিলেন এটাই তার ক্যারিয়ারের শেষ। সে হিসেবে ফ্রান্সের বিপক্ষে হারটাই হয়ে থাকল রোনাল্ডোর শেষ ইউরো ম্যাচ।
২০০৪ সাল থেকে ইউরোর এখন পর্যন্ত প্রতিটি আসরেই খেলেছেন রোনালদো। ইউরোর ইতিহাসে যা সবচেয়ে বেশিবার। এখন পর্যন্ত রোনাল্ডো খেলেছেন মোট ৬টি ইউরো। এরমধ্যে ২০১৬ সালে পর্তুগালকে চ্যাম্পিয়নও করেছেন তিনি। তবে এখানেই এবার থামছেন পর্তুগিজ মহাতারকা।
নিজের বিদায় নিয়ে রোনাল্ডো আগেই বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে এটি আমার জন্য শেষ ইউরো। তবে আমি এটা নিয়ে আবেগপ্রবণ নই। ফুটবলে যা কিছু আছে, আমি খেলার জন্য যে উৎসাহ, ভক্তদের মধ্যে যে উদ্দীপনা দেখি তা আমাকে মুগ্ধ করে। তাছাড়া এখানে আমার পরিবার থাকে, মানুষের আবেগ জড়িয়ে কাজেই এটা কেনো বিষয় নয়। কেননা, ফুটবল দুনিয়ার বাইরে আমার আর কি বা করার আছে?
সেমিতে উঠার ম্যাচে যতটা লড়াই আসা করা হয়। দু’দলের ফুটবলারদের মধ্যে তা চোখে পড়েনি। প্রথমার্ধে তো গোলের তেমন কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি পর্তুগাল ও ফ্রান্স। তবে বলের দখলটা নিজেদের কাছেই রেখেছিল পর্তুগাল। তবে দিনশেষে ফুটবল তো কেবল বল দখলের খেলা নয় গোলের। সেটাই পারেনি দলটি।
দ্বিতীয়ার্ধেও ম্যাচ এগিয়েছে প্রথমার্ধের মতো। ৬২ মিনিটে জোয়াও কানসেলোর দারুণভাবে বাড়ানো বল ধরে ব্রুনো ফার্নান্দেজ পেনাল্টি বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শট নেন। তবে একটু আগেভাগে নেওয়া শটটি ডান দিকে ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করেন ফ্রান্স গোলকিপার মেইগনান। দুই মিনিট বাদে ভিতিনিয়ার সোজাসুজি নেওয়া শটও প্রতিহত হয় তাঁর হাতে। ফিরতি বল রোনাল্ডো পান পোস্টের এক পাশে, পায়ের টোকায় জালে পাঠাতে চাইলেও মরী মেইগনানের গায়ে লেগে আবার বাধাপ্রাপ্ত হয়।
তবে এরপর ফ্রান্সও আক্রমণে যায়। ৬৬ মিনিটে কোলো মুয়ানি অনেকটাই একা পেয়ে যান কস্তাকে, কিন্তু মাঝে রুবেন দিয়াজে আটকে যান তিনি। বল যায় পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে। এর পাঁচ মিনিট পর এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার সামনেও বাধা ছিল শুধু পর্তুগাল গোলকিপার। কিন্তু তাড়াহুড়ায় শট নিয়ে তিনিও বল পাঠান বাইরে দিয়ে। বাকি সময়ে গোল না হলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও আসেনি ফল।
তবে আগের ম্যাচে তিনটি সেভ দেওয়া কস্তাকে নিয়ে আশা ছিল পর্তুাগলের। তবে এদিন তিনি ঠেকাতে পারেননি একটি শটও। টাইব্রেকার শট সেভ করতে পারেননি ফ্রান্সের মাইক মেইগনানও। তবে জোয়াও ফেলিক্সের নেওয়া পর্তুগালের চতুর্থ শট পোস্টে লেগে মিস হলে সেটিই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেয়। বিদায় নিতে হয় পর্তুগালকে।
রাতের আরেক ম্যাচে জার্মানিকে হারিয়ে সেমিতে পা রেখেছে স্পেন। মঙ্গলবার মিউনিখে প্রথম সেমিফাইনালে স্পেনের মুখোমুখি হবে ফ্রান্স।