বর্তমান সময়ে শিশুদের আচরণে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। এসবের মধ্যে কখনো বেশি পরিমাণ অস্থির, আবার কখনো মেজাজ হারিয়ে ফেলার মতো ঘটনা দেখা যায়। যা খুবই অস্বাভাবিক। আর শিশুদের এমন অস্বাভাবিক কার্যক্রমে অভিভাবকের চোখে-মুখে থাকে চিন্তার ভাঁজ।
শিশুদের মধ্যে এমন অস্বাভাবিক আচরণের কারণে অনেক অভিভাবকই হয়তো সন্তানকেই দোষারোপ করেন। কিন্তু আসলেই কি এর জন্য শিশুরা দায়ী? তবে বিশেষজ্ঞরা ভিন্ন কথা বলছেন। অস্বাস্থ্যকর একই ধরনের খাবারের পুনরাবৃত্তির কারণে শিশুর আচরণ এমনটা হয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে রাজধানীর পপুলার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান ও প্রধান পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন নিশি বলেন, শিশুদের একটু শান্ত রাখার জন্য অভিভাবকরা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে থাকেন। অভিভাকরা খুব ব্যস্ত থাকেন। এ ক্ষেত্রে আমরা প্রথমেই সন্তানের হাতে চিপস দেই।
এ পুষ্টিবিদ বলেন, চিপসে কিন্তু বিভিন্ন ধরনের সল্ট (লবণ) থাকে। যা শিশুদের হাইপার করে তোলার জন্য বেশ ভূমিকা পালন করে। অনেক শিশুদের মাঝেই এখন হাইপার টেনশন পাওয়া যায়। আমরা সবসময় প্রেশার ভাবতাম ৪০ বা ৫০/৬০ বছরের পরে; অর্থাৎ বয়স্ক মানুষের হবে। কিন্তু এখন অনেক ছোট ছোট শিশুদের মধ্যেও হাইপার টেনশন দেখা যায়। যা শুধুই খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনের জন্য।
শিশুকে সবুজ প্রকৃতির সান্নিধ্য না নেয়া, খেলার মাঠ কিংবা অনুভূতির সঙ্গী না দিয়ে অনেকেই রেস্টুরেন্ট কিংবা বদ্ধ স্থানে নিয়ে যান। আর তাদের হাতে দেয়া হয় বিভিন্ন ধরণের ফাস্টফুড। যা তাদের বেড়ে ওঠায় বাধার সৃষ্টি করছে।
পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন বলেন, আগে মায়েরা সন্তানের জন্য রান্না-বান্না করতেন। কিন্তু এখন, তাড়াতাড়ি নিয়ে এসে একটু তেলে ভেজে খাবার দিচ্ছেন। খাবারটি রেস্টুরেন্টের না হলেও তা কিন্তু বাইরে থেকে আনা হয়। যা সাধারণত প্রোসেসড ফুড, যাতে প্রিজারভেটিভ থাকে। এ কারণে সেসব খাবার দীর্ঘদিনেও নষ্ট হয় না। আর এ ধরনের প্রিজারভেটিভ শিশুদের হাইপার করে তোলার জন্য যথেষ্ট কারণ।
প্রাকৃতিক পুষ্টিকর খাবার ও ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর নানা রেসিপিকে সঙ্গী করলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সহজ হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।