সিঙ্গাপুরে পাচার করা বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ জব্দ করেছে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। অপারধমূলক কর্মকাণ্ড ও পাচারের সঙ্গে সম্পর্কিত এই অর্থ জব্দ করা হয় গত পাঁচ বছরে। ২০১৯ সালে জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৪০ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে অর্ধেক সম্পদই গত বছরের অভিযানে বাজেয়াপ্ত করা হয়।
এর মধ্যে ৪১৬ মিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলার প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের কাছে ফেরত পাঠানো হয়। বাজেয়াপ্ত করা ১০০ কোটি সিঙ্গাপুর ডলার দেশটির সরকারের জিম্মায় রয়েছে। গতকাল বুধবার সিঙ্গাপুর সরকার এক রিপোর্টে এসব তথ্য জানায়। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অর্থ পাচারের কাজটি খুবই দক্ষতার সঙ্গে করে থাকে অপরাধীরা।
দ্রুত গতিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের কৌশলও বের করেছে তারা। এতে সিঙ্গাপুরের বাইরে অবস্থান করা প্রতারিত ব্যক্তিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অর্থ পাচারের জন্য এশিয়ার স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে সিঙ্গাপুর। অপরাধীদের ঠেকাতে নানা রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটি।
ফ্যামিলি অফিস ও হেজ ফান্ড থেকে তথ্য চেয়েছে তারা। সক্রিয় নয়, তবে অবৈধ সম্পদ পাচারে সহায়তাকারী কিছু কম্পানিও বন্ধ করে দিয়েছে। বাণিজ্যিক কেন্দ্রে অবস্থিত ব্যাংকগুলো তাদের ধনী গ্রাহকদের আর্থিক তথ্যাবলি যাচাই-বাছাই করছে। সম্ভাব্য গ্রাহকদের ব্যাপারেও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ফিন্যানশিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) সম্মেলনে বুধবার সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওং বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, ‘অর্থ পাচার রোধে সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া শাসনব্যবস্থাও অপরাধীদের কারণে বাধার সম্মুখীন হতে পারে। প্রতিনিয়ত তারা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। তবে তাই বলে দেশে বৈধ বিনিয়োগের পথে বাধা সৃষ্টি করে এমন পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না।’ বিশ্বব্যাপী অর্থ নিয়ে সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি চালায় এফএটিএফ।
যেভাবে স্বর্গরাজ্য হলো সিঙ্গাপুর
পাচার করা অর্থ রাখার জন্য সুইস ব্যাংক বিশেষভাবে পরিচিত। এশিয়ার মধ্যে সুইস ব্যাংকের বিকল্প হয়ে উঠেছে সিঙ্গাপুরের ব্যাংকগুলো। এ কারণে সিঙ্গাপুরকে এশিয়ার সুইজারল্যান্ড বলা হয়ে থাকে। এর শুরুটা হয়েছিল নব্বইয়ের দশকে। বিভিন্ন ব্যাংক ও বিনিয়োগ বিষয়ক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুরকে অর্থ জমা করার আদর্শ স্থান হিসেবে বেছে নেয়।