গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলের ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ের’ যুদ্ধ প্রায় শেষ। এখন ইসরাইলের লক্ষ্য হিজবুল্লাহ। এমনটা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।
অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইলের গণমাধ্যমে দেয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু আরও বলেন, দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে শিগগিরই স্থল অভিযান শেষ করবে তার বাহিনী। এরপর হামাসের মিত্র হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য লেবাননের সীমান্তবর্তী এলাকার দিকে অগ্রসর হবে ইসরাইল।
তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, এর মানে এই নয় যে যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবে। হামাসকে সম্পূর্ণভাবে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম চলতে থাকবে।
হিজবুল্লাহ প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু বলেন, ‘বর্তমানে হিজবুল্লাহর তৎপরতায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। আমরা হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি।’
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলার পরের দিন থেকে হামাসকে সমর্থন করে হিজবুল্লাহ উত্তর ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট এবং ড্রোন নিক্ষেপ করে যাচ্ছে।
রেবাবার (২৩ জুন) ইসরাইলের চ্যানেল ১৪ টিভির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু জানান, রাফাহতে সাত সপ্তাহের ইসরাইলি অভিযান – যা দশ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করেছে; তার মধ্যদিয়েই বড় অভিযান শেষ হবে গাজায়।
সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু আরও বলেন, তিনি একটি ‘আংশিক চুক্তি’ র জন্য প্রস্তুত যা ১১৬ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে। তবে তিনি ‘হামাসকে ধ্বংস করার লক্ষ্য’ পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নেতানিয়াহু জানান, লেবানন সীমান্তে তাদের সেনা মোতায়েনের উদ্দেশ্য হবে আত্মরক্ষামূলক। তবে হিজবুল্লাহর রকেট এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার ইসরাইলি যাতে দেশে ফিরে আসতে পারে সেদিকেও নজর থাকবে।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘যদি আমরা পারি, আমরা কূটনৈতিকভাবে এটি সমাধান করব। যদি তা না হয়, তাহলে অন্য উপায় অবলম্বন করব। তবে আমরা সব ইসরাইলিকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনব।’
ইসরাইল চায় হিজবুল্লাহ তাদের যোদ্ধাদের সীমান্ত থেকে কয়েক কিলোমিটার পেছনে ফিরিয়ে আনতে রাজি হোক। তবে, হিজবুল্লাহ বলেছে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার আগে অন্য কোনো চুক্তি হবে না।
উত্তর ইসরাইলে কয়েক হাজার বাসিন্দাকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য করার পাশাপাশি, হিজবুল্লাহর হামলায় এ পর্যন্ত ইসরাইলে কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি বাহিনী লেবাননে বিমান ও কামান হামলার পাল্টা জবাব দিয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে উভয় পক্ষের হুমকির পাশাপাশি সীমান্তে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা বেড়েছে।