ভারতে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিশাল অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ফাঁসের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৩০-৩২ লাখ রুপিতে অভিন্ন এই ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন বিক্রি হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনের একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। খবর দ্য ইকোনোমিক টাইমস।
মেডিকেল কলেজসহ চিকিৎসাবিষয়ে বিভিন্ন কোর্সে অভিন্ন ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের কেলেঙ্কারিতে ভারতজুড়ে তোলপাড় অব্যাহত রয়েছে। কেলেঙ্কারিতে আরজেডির নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের ছেলে বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের নাম আসায় আন্দোলন আরও তীব্র হয়েছে।
অভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা ‘ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি এন্ট্রান্স টেস্ট আন্ডার গ্র্যাজুয়েট’ ২০২৪ (এনইইটি-ইউজে ২০২৪) নামে এই পরীক্ষা ৫ মে অনুষ্ঠিত হয় এবং গত ১৪ জুন ফল প্রকাশ করা হয়। পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠলে গতকাল বুধবার এই পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। বহু শিক্ষার্থী ও অভিভাবক পুনরায় পরীক্ষার দাবি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে কয়েক ডজন পিটিশন হয়েছে। সেগুলো সুপ্রিম কোর্টের পর্যালোচনাধীন রয়েছে। তবে এই পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা এনটিএ কর্মকর্তারা প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এই ঘটনার জেরে এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তার অন্যতম হোতা অমিত আনন্দকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, নিট-২০২৪ এর প্রশ্নপত্র ৩০-৩২ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পরীক্ষার আগের দিন অর্থের বিনিময়ে ৬ জন ‘পেপার মাফিয়া/ প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের’ কাছে ওই প্রশ্নপত্র বিক্রি হয়।
ভারতের গণমাধ্যমগুলো বলছে, বিহারের মুঙ্গের জেলার বাসিন্দা অমিত আনন্দ এজি কলোনি এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়ে এই প্রশ্নপত্র বিক্রির ‘দোকান’ দিয়ে বসেছিলেন। সেখান থেকেই চলত প্রশ্নপত্র বিক্রির কারবার।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রী বিজয় সিনহা নিট প্রশ্নপত্র দুর্নীতির ঘটনায় রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী আরজেডির নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের তেজস্বী যাদবের নাম টেনে আনায় নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীর দাবি, যাদবেন্দু নামের এক অভিযুক্তের জন্য ‘রুম বুক’ করে দেন তেজস্বী যাদবের ব্যক্তিগত সচিব প্রীতম কুমার সিকান্দার। তারা পরস্পরের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়।
এই সিকান্দারও গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। অনুরাগ যাদব নামে এক নিট পরীক্ষার্থীর চাচা হন এই সিকান্দার। তিনি পেশায় প্রকৌশলী। অনুরাগ পুলিশকে বলেছে, সিকান্দার তাকে কোটা থেকে ডেকে পাঠায় এবং প্রীতম কুমারের সাহায্যে একটি গেস্ট হাউসে রাখেন। এই প্রীতম কুমারই তেজস্বীর সেক্রেটারি বলে বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি। বিহারের বর্তমান উপ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, যাদব পরিবারের সঙ্গে সিকান্দারের ঘনিষ্ঠতা আছে৷ লালু প্রসাদ যাদব যখন রাঁচীর জেলে বন্দি ছিলেন, তখন তিনি লালুর দেখাশোনা করতেন।