টানা বর্ষণ আর উজানের ঢলে সিলেট অঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকা তলিয়ে যায়। ভোর থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি কিছুটা নেমে গেছে। কিন্তু এতে আশা দেখছেন না আবহাওয়াবিদরা। শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, আরও ভারি বৃষ্টিপাতের।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, এ অঞ্চলে আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টায় আবারও ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। উজানেও ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এতে নদ-নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হতে পারে।
সোমবার (১৭ জুন) ভোর ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরআগে রোববার ভোর ৬টা থেকে সোমবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৭৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ৩৬৫ মিলিমিটার, সিলেটে ২৮৫ মিলিমিটার, জাফলংয়ে ২৫২ মিলিমিটার, সুনামগঞ্জের লরের গড়ে ২২৮ মিলিমিটার, সিলেটের লাটুতে ১৭৫ মিলিমিটার, মৌলভীবাজারের বড়লেখা দখিনাবাগে ১৬২ মিলিমিটার, সিলেটের কানাইঘাটে ১৩৭ মিলিমিটার, জকিগঞ্জে ১৩৩ মিলিমিটার ও লালাখালে ৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পাউবো।
এছাড়া সিলেটের উজানে থাকা ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ১২৬, শিলিগুড়িতে ১২৬ দশমিক ৮, কোচবিহারে ৯২, গোয়াহাটিতে ৭০, শিলচরে ৬৮ ও আসামে ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে দেশটির আবহাওয়া অফিস।
এমন অবস্থায় ফিকে হয়ে গেছে সিলেটবাসীর ঈদ। অবিরাম বৃষ্টিতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিচতলার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন কক্ষে পানি ঢুকে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন রোগী, স্বজন ও চিকিৎসকরা।
এদিকে, টানা বর্ষণে সুনামগঞ্জ শহরের বেশিরভাগ এলাকা তলিয়ে গেছে। সুরমা নদীর পানি উপচে শহরে প্রবেশ করছে। এতে শহরের পূর্ব নুতনপাড়া, পশ্চিম নতুনপাড়া, মরাটিলা শান্তিবাগ, টিলাপাড়া, জামতলা, হাজীপাড়া, মল্লিকপুর, পশ্চিম বাজার, মধ্যবাজার জেলরোড, শান্তিবাগ, নবীনগর ষোলঘর, উকিলপাড়া, বড়পাড়া, সাহেব বাড়িঘাট, লঞ্চঘাট, কালীপুর ও সুলতানপুর এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। রোববার (১৬ জুন) রাত ১১টা থেকে সোমবার সকাল ১১টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জে ৩৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।