কোনো নাবালিকার অন্তর্বাস খুলে ফেলা ও তাকে নগ্ন করার অর্থ কোনোভাবে তাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা বলা যায় না। এটা কোনো নারীর মর্যাদাহানির মতো অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা যায়। ৩৩ বছর আগের একটি মামলার রায়ে এমন পর্যবেক্ষণের কথা জানাল ভারতের রাজস্থান হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার আদালতে বিচারপতি অনুপ কুমার জানিয়েছেন, কোনো মেয়ের অন্তর্বাস খুলে ফেলে তাকে পুরো নগ্ন করে দেওয়ার অর্থ এটা নয় যে, সেটা ৩৭৬ ধারার (ধর্ষণচেষ্টা) আওতায় পড়বে। এটা ধর্ষণের চেষ্টার ধারার মধ্যে পড়বে না। এই ধর্ষণের চেষ্টা তখনই বলা যায়, যখন এই নগ্ন করার পরেও কিছু করা হয়…!
সেই সঙ্গে আদালত আরও জানিয়েছে, এই যে অন্তর্বাস খোলা, তাকে পুরো নগ্ন করা- এটা নারীদের মর্যাদাহানির সঙ্গে তুলনা করা যায়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারা অনুযায়ী- এটা অপরাধ বলে গণ্য করা যেতে পারে।
বিচারপতি অনুপ কুমার বলেন, আমার মতে, ৩৭৬, ৫১১ আইপিসি ধারায় এটা প্রমাণ করা যায় না। অন্যকথায় অভিযুক্তকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত করা যায় না। এটাকে নারীর মর্যাদাহানিকর বলে উল্লেখ করা যায়। কিন্তু এটাকে ধর্ষণের চেষ্টা বলে উল্লেখ করা যায় না।
রাজস্থানে ৩৩ বছর আগে, ১৯৯১ সালের ৯ মার্চ অভিযোগটি করা হয়েছিল। তখন এক ব্যক্তির নাতনি স্থানীয় ওয়াটার বুথে পানি খাচ্ছিল। তার বয়স ছিল ৬ বছর। সেই সময় অভিযুক্ত শুভালাল রাত ৮টা নাগাদ সেখানে আসে। এরপর তাকে স্থানীয় ধর্মশালায় নিয়ে যায়। মূলত ধর্ষণ করার জন্যই তাকে ধর্মশালায় নিয়ে যায়। এসময় মেয়েটির চিৎকারে গ্রামের লোকজন ছুটে আসে এবং মেয়েটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
অভিযোগকারীর দাবি, গ্রামের লোকজন ছুটে না এলে ওই মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হত। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যখন অভিযোগ তোলা হয়েছিল, তখন তার বয়স ছিল ২৫ বছর।
এই মামলায় আদালত জানিয়েছে, এ ধরনের ক্ষেত্রে সাধারণত তিনটি পর্যায় থাকে। প্রথম পর্যায়ে দেখা যায়- যখন এই ধরনের অপরাধ করার প্রথম একটা পর্যায় থাকে। দ্বিতীয় পর্যায়ে অভিযুক্ত বিষয়টি সংগঠিত করার জন্য প্রস্তুতি নেয়। আর তৃতীয় পর্যায়ে গোটা ঘটনাটি সংঘঠিত করার জন্য চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয় ওই অভিযুক্ত। কিন্তু এই মামলার ক্ষেত্রে প্রস্তুতির আগের পর্যায় পর্যন্ত হয়েছিল। ওই মেয়েটি চিৎকার করার পরেই অভিযুক্ত পালিয়ে যায়। যা কোনোভাবেই ধর্ষণচেষ্টার ধারার মধ্যে পড়ে না। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস