কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে চুরি হওয়া আড়াই মাস বয়সী শিশু ইসরাফিলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (১২ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের আদাবাড়িয়া গ্রামের বুড়িমারা বিলের মাঠ থেকে ওই মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।ইসরাফিল উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের আনন্দনগর গ্রামের কৃষক জিয়াউর রহমান ও রেহেনা দম্পতির সন্তান।
জানা যায়, ওই দম্পতির তিন কন্যা সন্তানের পর ছেলে ইসরাফিলের জন্ম হয়। সোমবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের আদাবাড়িয়া গ্রামের নানা মোহন মণ্ডলের ঘর থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় শিশুটির চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে কুমারখালী থানায় অজ্ঞাতদের নামে মামলা করেন শিশুটির বাবা।
স্বজনরা জানান, সোমবার বেলা ১১টার দিকে রেহেনা খাতুন আড়াই মাস বয়সী একমাত্র ছেলে সন্তান নিয়ে বাবা মোহন মণ্ডলের বাড়িতে বেড়াতে যান। রাতে শিশু ইসরাফিল, মা রেহেনা ও নানি রেণু খাতুন দরজা বন্ধ না করেই ঘুমিয়ে পড়েন। হঠাৎ রাত ১০টার দিকে ঘুম ভেঙে মা রেহেনা দেখেন, তার পাশে সন্তানটি নেই। সেসময় তিনি চিৎকার করে উঠলে স্বজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন, সম্ভাব্য স্থানেও খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
মঙ্গলবার মাইকিং করা হয় এবং থানায় মামলা করেন তার বাবা। আর বুধবার বিকেলে নানাবাড়ি থেকে প্রায় ৬০০ মিটার দূরে বুড়িমারা বিল থেকে ওই শিশুর মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পাটক্ষেতের পাশে ফাঁকা মাঠে পড়ে আছে শিশুটির মরদেহ। শরীরের একাধিক স্থানে রক্তমাখা ক্ষত। এটা দেখে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এ সময় নিহত ওই শিশুর বাবা জিয়াউর রহমান বলেন, পায়ে রক্ত জমে আছে। মনে হচ্ছে মারছে। আমিতো কাউকে দেখিনি। তবে আমার আল্লাহ এর বিচার করবে। এ ব্যাপারে থানায় মামলাও করেছি।তবে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে পারেননি শোকে মাতম মা রেহেনা খাতুন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কৃষকের ভাষ্য, আড়াই মাসের শিশু তো হাঁটতে পারে না। সে কীভাবে মাঠে যাবে বা হারাবে। ওকে শত্রুতা করে খুন করা হয়েছে।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকিবুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে মাঠ থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি মর্গে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।তিনি আরও জানান, মরদেহটি শনাক্ত করেছেন শিশুটির স্বজনরা। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।