বাংলাদেশের অর্থনীতির সঙ্গে টেলিকম খাত অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। টেলিকম খাতে মাত্রাতিরিক্ত কর বাড়ানো হলে দেশের মানুষের ডাটা কনজাম্পশন হ্রাস পাবে ফলে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রভাব পড়বে। যা সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করবে। এছাড়া বিদেশি কোম্পানিগুলো এই খাতে বিনিয়োগেও আগ্রহ হারাবে বলে মনে করে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারী বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন দি ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ফিকি)।
সোমবার (১০ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত ’২০২৪-২৫’ অর্থবছরের বাজেট পর্যালোচনা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে এ সব কথা বলেন ফিকির সভাপতি জাভেদ আখতার।
ফিকি সভাপতি বলেন, আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি, স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলছি, সেখানে কিন্তু টেলিকম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল বাংলাদেশে ইন্টারনেট ও ডাটার সহজলভ্যতা প্রয়োজন। বর্তমান ভ্যাট-ট্যাক্স নীতিমালায় এই সেক্টরে কোম্পানিগুলো তাদের নেটওয়ার্ক আপগ্রেডিংয়ে আরও বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হবে না।
এই খাতে বিদেশি কোম্পানিগুলোও নতুন করে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য যে বিষয়গুলোতে উৎকর্ষতা প্রয়োজন, সেখানে মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করে টেলিকম খাত। টেলিকম খাতে ব্যবহারকারীদের খরচ কমাতে হবে। কারণ এই খাতের সহজলভ্যতার সঙ্গে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশের সম্পর্ক রয়েছে। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফিকি’র কর বিষয়ক পরামর্শক স্নেহাশীষ মাহবুব।
মূল প্রবন্ধে প্রস্তাবিত বাজেটের বিষয়ে ফিকির বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে মাহবুব বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের বিভিন্ন নীতিতে বেভারেজ ও টেলিকম খাত খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে এ সংক্রান্ত নীতির অধারাবাহিকতার কারণে এই খাতগুলোতে বিনিয়োগ হুমকির মুখে পড়বে। ভ্যাট ও টাক্স ব্যবস্থায় সংস্কার আনতে হবে। যে সব বিদেশি কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে, তারা তাদের ব্যবসায় বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেও প্রথমেই লাভের মুখ দেখে না।
তারা ৪ থেকে ৫ বছর ব্যবসা করে যখন লাভের মুখ দেখা শুরু করলো, তখন যদি তাদের লাভের থেকে তাদের ওপর ধার্যকৃত কর বেশি হয়, তখন এই প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশ থেকে আরও বিনিয়োগ আনার বিষয়ে নিরুৎসাহিত হবে।
পাশাপাশি যৌক্তিকভাবে করহার নির্ধারণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, হঠাৎ করে পাঁচশ’ শতাংশ কর বাড়ানো কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ফিকির নির্বাহী পরিচালক টি আই এম কবির, উপদেষ্টা ও সাবেক সভাপতি রূপালী হক চৌধুরী, উপদেষ্টা শেহজাদ মুনিমসহ ফিকির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।