জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে প্রতারণা ও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে।এ ঘটনায় বকশীগঞ্জ থানা পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা না নেয়ার অভিযোগ করেছেন সেই সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। এ অবস্থায় বিচার না পেলে সপরিবারে আত্মহত্যার হুমকিও দেন তিনি।
শনিবার (৮ জুন) রাতে জামালপুর শহরে প্রেসক্লাব জামালপুরের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদা ইয়াসমিন স্মৃতি।
অভিযুক্ত মাসুদ উল হাসান (৩৮) বকশীগঞ্জ পৌর এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের সন্তান। আরেক অভিযুক্ত মো. আ. সালাম মাহমুদ বকশীগঞ্জ পৌর এলাকার নামাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জানান, একই শহরের বাসিন্দা থাকার সুবাদে দীর্ঘদিন ধরে মাসুদের সঙ্গে তাদের পারিবারিক সম্পর্ক। পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় প্রচার-প্রচারণা ও নানা মিথ্যা কথা বলে তার কাছ থেকে চার লাখ বত্রিশ হাজার টাকা নেয় মাসুদ। পরে আরও টাকা দাবি করে সে। সেই টাকা না দেয়ায় তাদের সম্পর্কের অবনতি হয়।
অভিযোগ করে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘সালামের কাছে আমি কিছু টাকা ধার নিয়েছিলাম। সেটি শোধ করছিলাম। কিন্তু মাসুদ ও সালাম দীর্ঘদিন ধরে আমাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। সবশেষ ২০ মে রাতে তারা দুইজন আমার বাড়ির রান্না ঘরে ঢুকে আমাকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করে। কিন্তু সেই সময় আমার স্বামী চলে আসায় তারা পালিয়ে যায়।’
সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্বাচন থাকায় আমি এতদিন আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারিনি। তবে ৭ জুন রাতে মাসুদ আবার আমাকে কুপ্রস্তাব দেয় এবং আমার নামে মিথ্যা অপবাদ ছড়াতে থাকে। তাই আমি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছি।’
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি মামলা করার জন্য থানায় সারারাত ছিলাম। সকালে আরেকবার গিয়েছিলাম। তবুও থানার ওসি আমার মামলা নেয়নি। আমি এখন সমাজে মুখ দেখাতে পারছি না। হয় পুলিশ দোষীদের গ্রেফতার করুক না হয়, আমি এ দুইজনের জন্য পরিবারসহ আত্মহত্যা করব।’
তবে অভিযুক্ত মাসুদ উল হাসান মোবাইল ফোনে বলেন, ‘সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান যে অভিযোগটি করছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি তাকে যৌন নিপীড়ন করেছি বা অশ্লীল ইঙ্গিত করিনি। গত তিন মাস ধরে তাদের সঙ্গে আমার কথা হয় না।’
মাসুদ উল হাসান বলেন, ‘অভিযোগকারীর সঙ্গে আমাদের অনেক ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তার স্বার্থে আঘাত লাগায় তিনি, তার স্বামী, তার বাবা ও ভাই মিলে ৭ জুন রাতে প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে আমার ওপর হামলা করে। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতেই তিনি এখন এসব নাটক সাজাচ্ছেন।’
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ খান বলেন, ‘বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’