‘শয়তানের ধূমকেতু’ নামে পরিচিত অস্বাভাবিক শিং-সদৃশ ধূমকেতুটিতে অনবরত বিস্ফোরণ ঘটছে। এটি রোববার (২ জুন) ভোর ৩টার (ইস্টার্ন টাইমস) দিকে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছ দিয়ে অতিক্রম করবে।
মে মাসের প্রথম সপ্তাহে উত্তর গোলার্ধ থেকে ধূমকেতুটি দেখতে না পাওয়া গেলেও, দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে দূরবীণ বা টেলিস্কোপের মাধ্যমে অনেকটা অস্পষ্ট ও দূলর্ভ মহাজাগতিক বস্তুটি দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। ঠিক কেন দ্রুতগতির এই ধূমকেতুটি এমন একটি আকৃতি ধারণ করেছে তা এখনও বিজ্ঞানীদের কাছে রহস্যে ঘেরা।
মহাকাশীয় বস্তুটি হ্যালির ধূমকেতুর মতো প্রতি ৭১ বছরে সূর্যের চারপাশে শুধুমাত্র একবার প্রদক্ষিণ করতে পারে। আকাশ পর্যবেক্ষণকারীদের মধ্যে যারা গভীরভাবে বিষয়টির ওপর নজর রাখেন তারা এটিকে জীবনে একবার দেখার সুযোগ পান। খবর সিএনএনের।
এই ধূমকেতুটি আগামী কয়েক দশকে আর পৃথিবীর পাশ দিয়ে যাবে না। আনুষ্ঠানিকভাবে ধূমকেতুটি ১২/পি/পন্স-ব্রুকস নামে পরিচিত। মহাকাশীয় বস্তুটি ২১ এপ্রিল সূর্যের সবচেয়ে কাছে দিয়ে অতিক্রম করেছে। তখন সূর্য থেকে এর দূরত্ব ছিল প্রায় ১২ কোটি কিলোমিটার।
ধূমকেতুটি এর জীবদ্দশায় রোববার পৃথিবীর সবচেয়ে কাছ দিয়ে অতিক্রম করবে। তবে তখনও পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব থাকবে ২৩ কোটি কিলোমিটার। এতে করে কোনও ধরনের ঝুঁকি থাকবে না পৃথিবীতে। আমরা জানি যে, সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব হচ্ছে প্রায় ১৫ কোটি কিলোমিটার।
অ্যারিজোনার লোয়েল অবজারভেটরির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ডক্টর ডেভ শ্লেইচার বলেন, ধূমকেতুটি এপ্রিলের শেষের দিকে উজ্জ্বলতম হয়ে উঠে এবং পরবর্তী তিন থেকে চার সপ্তাহে দ্রুত বিবর্ণ হতে থাকে।’
লোওয়েলের পোস্টডক্টরাল সহযোগী জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. টেডি কেরেটা বলেন, নিরক্ষরেখার নিচে বসবাসকারী মানুষদের জন্য ১৯৫০ সালের পর এই প্রথম ধূমকেতুটি দেখার সুযোগ হচ্ছে। এই ধূমকেতুর দু’জন বিখ্যাত আবিষ্কারক হচ্ছেন জিন-লুই পন্স এবং উইলিয়াম রবার্ট ব্রুকস। সুস্পষ্টভাবে এই শয়তানের ধূমকেতুটি ১৮১২ সালে পন্স এবং ১৮৮৩ সালে ব্রুকস দেখতে পেয়েছিলেন।
তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ধূমকেতুটি নিয়ে ভাবার অনেক আগেই এটি সম্ভবত হাজার হাজার বছর ধরে সূর্যের চারপাশে বহুবার পরিক্রমণ করেছে। দেখতে উদ্ভট এই ধূমকেতুটির পরিধি ১০-২০ কিলোমিটার হতে পারে।