উপকূলে ঝড়, বৃষ্টি, জোয়ার আর জলোচ্ছ্বাসের তাণ্ডব চালিয়ে ঘূর্ণিঝড় রেমালের কেন্দ্রভাগ দুপুরের পর ঢাকায় ঢুকবে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ থাকবে সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার আর বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঘূর্ণিঝড় নিয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য দেন।
আজিজুর রহমান বলেন, রেমালের কেন্দ্রভাগ দুপুর ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে ঢাকার দিকে আসবে। এটি এখন অনেকটা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে। এর ফলে ঢাকায় আরও বৃষ্টি হবে। সেই সাথে ঝোড়ো বাতাস বইবে। ঢাকার ওপর দিয়ে এটা পর্যায়ক্রমে সিলেট দিয়ে বাংলাদেশের বাইরে যাবে ৷ ঢাকায় আসলে বৃষ্টিপাত আর দমকা বাতাস বাড়বে একটু।
আজিজুর রহমান বলেন, রেমাল সারা রাত তান্ডব চালিয়েছে। এর অগ্রভাগ দুপুরে উপকূলে আসে। মধ্যরাতে কেন্দ্র ওপরে উঠে আসে। এরপর ৫ থেকে ৭ ঘণ্টা ধরে সে পুরোটা ওপরে উঠে আসে। ৬টার আগেই উপকূলে উঠে আসে। এখন সাইক্লোন থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাব যশোরে আছে এরপর ঢাকায় আসবে। বাতাস ২০ থেকে ৪০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকবে। এর চেয়ে আর বাড়ার সুযোগ নাই। এটি উপকূলের পুরোটা অংশ পেয়েছে। কক্সবাজারের কয়েকটা এলাকা পানিতে ডুবে গেছে।
রেমাল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে জানিয়ে আজিজুর রহমান বলেন, রেমাল এখন প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে ঘূর্ণিঝড় ও সবশেষে উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে যশোর ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। এটি আরও উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টিপাত ঝড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। এটি আগামীকালের মধ্যে আরও দুর্বল হয়ে বৃষ্টি দিয়ে একই দিক দিয়ে নিম্নচাপ আকারে আসামের দিকে চলে যাবে।
আজিজুর রহমান বলেন, রেমাল গতকাল সন্ধ্যার দিকে উপকূলের মোংলা ও ভারতীয় সাগর আইল্যান্ডে দিয়ে বাংলাদেশ অতিক্রম শুরু করে ৷ এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি ছিল পটুয়াখালীর খেপুপাড়াতে।
পরিচালক জানান, ঝড়ের সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ ছিল পটুয়াখালীর খেপুপাড়াতে ১১১ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। রাত ১টা ৩০ মিনিটে এটা রেকর্ড করা হয়েছে। আর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে চট্টগ্রামে ২০৩ মিলিমিটার।
আজিজুর রহমান আরও বলেন, বাতাসের গতিবেগ দেখে বোঝা যাচ্ছে রেমাল পটুয়াখালী ও খেপুপাড়া অঞ্চলে বেশি সময় স্থায়ী ছিল। এটির বড় অংশ এই অঞ্চল দিয়ে পার হয়েছে।
এছাড়া সাতক্ষীরাতে বাতাসের গতিবেগে রাতে রেকর্ড করা হয় সর্বোচ্চ ৭৮ কিলোমিটার রাত দুইটায়। মোংলাতে রাত সাড়ে বারোটায় ৮০ কিলোমিটার ও রাত ১১টায় ৮৩ কিলোমিটার। ঢাকায় সকাল ৬টা ২০ মিনিটে বাতাসের গতিবেগ সর্বোচ্চ রেকর্ড করা হয় ৬৯ কিলোমিটার। আর চট্টগ্রামের পতেঙ্গাতে ৭৪ কিলোমিটার।
রেমালের প্রভাবে খেপুপাড়া ও পটুয়াখালীতে বৃষ্টি হয়েছে ১১১ মিলিমিটার, ঢাকাই সকাল ৬টা পর্যন্ত ৫৯ মিলিমিটার, চট্টগ্রামে ২০৩ মিলিমিটার ও কুতুবদিয়াতে ১২৫ মিলিমিটার। এছাড়া সারা দেশেই বৃষ্টিপাত হচ্ছে। যা আজ সারা দিন অব্যাহত থাকবে।