cow

এবার কোরবানিতে পশুর অভাব হবে না

জানা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর মধ্যে যশোর গরু হৃষ্টপুষ্টকরণে বেশ এগিয়ে। বিশেষ করে ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হওয়ায় খামার স্থাপনের মাধ্যমে এ জেলায় গরু পালন বেড়েছে। ফলে সারা বছরের চাহিদা মেটাচ্ছে এসব খামারে হৃষ্টপুষ্ট করা গরু। তবে কোরবানির বাজার ধরতে খামারিদের বাড়তি উদ্যোগ চোখে পড়ার মতো।

এ বছর জেলার ৮টি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ১৪ হাজার ১৩৫টি ছোট-বড় খামারে দেশীয় পদ্ধতিতে পালন করা হচ্ছে লক্ষাধিক গরু ও ছাগল। পাশাপাশি বাড়িতে বাড়িতে ব্যক্তি পর্যায়েও হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে অনেক গরু। দিন-রাতের অবিরাম পরিচর্যা এবং প্রাকৃতিক ও সুষম খাদ্য দিয়ে মোটাতাজা করা গরু-ছাগল এখন বিক্রির জন্য প্রস্তুত।

তবে খামারিদের অভিযোগ, ঊর্ধ্বগতির বাজারে প্রাকৃতিক ও সুষম খাদ্য দিয়ে গরু মোটাতাজাকরণে খরচ বেশি হয়েছে। ফলে সন্তোষজনক দাম পাওয়া নিয়ে চিন্তিত তারা।

যশোর চৌগাছা উপজেলার হাকিমপুর গ্রামের গরু খামারি ঝন্টু বিশ্বাস বলেন, ‘জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে কখনও ভিটামিন জাতীয় ওষুধ বা ভ্যাকসিন দেয় আবার কখনও দেয় না। তবে আমি পশু মোটাতাজাকরণের জন্য কোনো অসদুপায় অবলম্বন করি না। আমার খামারে ১৪টি গাভী, ১৪টি ছাগল এবং কোরবানির বাজারের জন্য প্রস্তুত করা ২৫টি গরু আছে। আসন্ন কোরবানির বাজারে ভালো দাম পাব বলে আশাবাদী।’

আরেক খামারি বাঘারপাড়া উপজেলার জামদিয়া গ্রামের মো. শামীম রেজা বলেন, ‘আমার ৫১টি গরু আছে, যার প্রায় সবকয়টি বিক্রি উপযোগী। এবার খরচ অনেক বেশি। দাম পাওয়া নিয়ে একটু চিন্তিত। তারপরও আশা করি, এবার কোরবানির পশুর হাটে ভালো দাম পাবো। প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে গরুর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ, ভিটামিন ও ভ্যাকসিন দিয়ে থাকেন। যা পশুর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।’

বাঘারপাড়ার ভাঙ্গুড়া গ্রামের আরেকজন খামারি টিপু সুলতান বলেন, ‘আমরা সাধারণত কৃষিলোন বা এনজিও থেকে লোন নিয়ে পশুর খাবার ও গরু লালন পালন করি। প্রাণিসম্পদ অফিস খামারিদের প্রয়োজনীয় ওষুধ, ভিটামিন ও ভ্যাকসিন দিয়ে সহায়তা করেন।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল হক বলেন, ‘এ বছর যশোরে কোরবানির পশুর চাহিদার চেয়ে সরবরাহ বেশি। খামারিরা এখন কোনো অসদুপায় অবলম্বন করে না। আমরা প্রতিনিয়ত খামারিদের সঙ্গে বৈঠক করি এবং তাদের সচেতন করি। আমরা পশুদের সময় মতো ভিটামিন ও ভ্যাকসিন দিয়ে থাকি, যাতে করে পশুদের সুস্বাস্থ্য গঠন হয়। তাছাড়া খামারিদের ওপর প্রাণিসম্পদের নজরদারি সবসময় থাকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক কারণে গো-খাদ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এরপরও খামারিরা ঈদে ভালো দাম পাবেন বলে আশা করছি। এছাড়া কোরবানির পশুরহাটে প্রাণিসম্পদের ভ্যাটারনারি মেডিকেল টিম থাকবে। কোনো পশু অসুস্থ হয়ে গেলে যাতে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া যায়, বা কোনো অসুস্থ পশু যেন কেউ হাটে উঠাতে না পারে। যশোর জেলায় মোট প্রাণিসম্পদের পশু চিকিৎসকের সংখ্যা ১৫ জন।’

প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য মতে, এ বছর কোরবানির জন্য জেলায় ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৫১টি গরু-ছাগল প্রস্তুত রয়েছে। যার মধ্যে ৩৯ হাজার ৬৭৮টি গরু এবং ৮৭ হাজার ১৭৩টি ছাগল।

Scroll to Top