ফেনীর সোনাগাজীতে মারামারির ঘটনায় করা একটি মামলায় নুরুন্নবী ওরফে রানাকে (৩৮) দুই বছর কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা করেছিলেন আদালত। সেই সাজা এড়াতে দীর্ঘ আট বছর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে পালিয়ে ছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ফেনী শহরের দাউদপুল এলাকার একটি বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ শুক্রবার সাজাপ্রাপ্ত আসামি নুরুন্নবীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। নুরুন্নবী সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চর সোনাপুর এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৭ মার্চ মারামারি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নুরুন্নবীর বিরুদ্ধে সোনাগাজী মডেল থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। মাসখানেক কারাভোগের পর জামিনে বের হয়ে তিনি গা ঢাকা দিয়ে গোপনে কাতারে চলে যান।
মামলার সাক্ষ্যপ্রমাণে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত তাঁকে দুই বছর কারাদণ্ড, দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা বিচারাধীন।
সোনাগাজী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফরহাদ কামাল সুজন , আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাওয়ার পর তিনিসহ থানার একাধিক কর্মকর্তা নুরুন্নবীর খোঁজে মাঠে নামেন। কিন্তু তিনি বিদেশে থাকায় তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এর মধ্যে জানতে পারেন দীর্ঘ আট বছর পর নুরুন্নবী কাতার থেকে গোপনে দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি প্রায়ই স্থান পরিবর্তন করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বিভিন্ন স্বজনের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
কয়েক দিন আগে পুলিশ সদস্যরা তাঁকে ধরতে ছদ্মবেশে তাঁর গ্রামের বাড়ি এবং ফেনী শহরের সম্ভাব্য কয়েকটি স্থানে গিয়ে খোঁজখবর নেন। পরে এক ব্যক্তির মাধ্যমে তাঁর মুঠোফোন নম্বর ও ছবি সংগ্রহ করা হয়। সেই নম্বরের সূত্র ধরে পুলিশ সদস্যরা বৃহস্পতিবার রাতে ফেনী শহরের দাউদপুল এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন।
মারামারির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত নুরুন্নবীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ আদালতের মাধ্যমে ফেনীর কারাগারে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদীপ রায়।