সরকার কারাগারকে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা করতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন কথা বলেন।
বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানো সম্পর্কে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ইশরাককে একটি মিথ্যা মামলায় জামিন না দিয়ে সরকারের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পেশিশক্তির জোরে চলছে বিরোধী দল দমনের কর্মসূচি।
উল্লেখ্য, গতকাল রোববার রাষ্ট্রদ্রোহের এক মামলায় ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠান আদালত। সেদিন তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে ১২টি মামলায় জামিন আবেদন করেন। আদালত ১১টি মামলায় জামিন মঞ্জুর করলেও পল্টন থানার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে আদালতের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রিজভী। তিনি বলেন, আদালতের স্বাধীনতা থাকলে সাজানো মামলায় বিপুলসংখ্যক বিএনপি নেতা–কর্মীকে সাজা দেওয়া যেত না। তাঁর অভিযোগ, মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত মামলায় অন্যায়ভাবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান, বনানী থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদসহ মোট ৩০ নেতা–কর্মীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
এ ছাড়া ক্যান্টনমেন্ট থানার তিনটি মামলায় মোট ১৪ নেতা–কর্মী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে জামিন চাইতে গেলে আদালত তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।ইশরাক হোসেনসহ বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার, সাজা বাতিল ও অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান রিজভী।
দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষেরা এখন কারাগারে, আর টেন্ডারবাজ, সিন্ডিকেটবাজ, চাঁদাবাজ ও ঋণখেলাপিদের দৌরাত্ম্য এখন চরমে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, অনিয়ম, অপচয়, দুর্নীতি ও মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবনে হতাশা, অশান্তি ও নৈরাজ্য নেমে এসেছে।
শীর্ষ ব্যবসায়ী অনুমতি না নিয়ে বিদেশে অর্থ বিনিয়োগ করতে পারেন অভিযোগ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, নিয়মনীতি না মেনে ক্ষমতাঘনিষ্ঠের কাছে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংকিং খাতে চরম অব্যবস্থাপনা। বিরোধী দলের কথা বলা, স্বাধীন মত প্রকাশ করা আওয়ামী লীগের নীতিবিরুদ্ধ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।